বাংলাদেশ-ভারত ফুটবল ম্যাচ দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের সমর্থকদের মাঝে অতিরিক্ত উত্তেজনার সৃষ্টি করে। মঙ্গলবার ঢাকায় এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ শুরুর আগেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উপচে পড়া দর্শকের ঢল দেখা যায়। সবার একটাই প্রত্যাশা—ঐতিহাসিক সাফল্যের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়া। ম্যাচ উপভোগ করতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন উপদেষ্টা এবং ক্রীড়া অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
অবশেষে সেই প্রতীক্ষার সফল সমাপ্তি ঘটে। বাংলাদেশ ১-০ গোলে পরাজিত করেছে ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে। ২২ বছর পর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে এ জয় ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে আনন্দের ঝড় তোলে। ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে হাজির হন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের মানসিক শক্তি, ত্যাগ ও লড়াইয়ের প্রশংসা করেন।
এই ঐতিহাসিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি জাতীয় ফুটবল দলকে ২ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন। দলকে আরও অনুপ্রেরণা যোগাবে এই পুরস্কার—এমনটাই মত জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খানের। তিনি জানান, উপদেষ্টার ঘোষণা খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দলের অধিনায়ক হামজা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আবার ইংল্যান্ডে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আগামীকাল সকালে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
শুধু পুরুষ দল নয়, এর আগে নারী ফুটবলের সাফল্যেও বিশেষ অবদান রেখেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য নারী ফুটবলারদের দিয়েছেন এক কোটি টাকা এবং এশিয়া কাপে কোয়ালিফাই করায় আরও ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার। উভয় প্রতিশ্রুতিই তিনি পূরণ করেছেন দ্রুততম সময়ে। তবে একই সাফল্যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঘোষণা করা দেড় কোটি টাকার পুরস্কার এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, যা নারী ফুটবলারদের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ ফুটবল দলের এই অর্জনকে ভিত্তি করে দেশের ফুটবল উন্নয়নে নতুন পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই আলোচনায় এসেছে। ক্রীড়াঙ্গনে আশার সুর—এই জয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দিকনির্দেশনা হয়ে থাকবে, আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ফুটবলকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
সিএ/এমআরএফ


