দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত করতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টাই হওয়া ম্যাচে ভাগ্য সহায় হয়নি টাইগারদের। ম্যাচটি গড়ায় সুপার ওভারে, যেখানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে, যা কার্যত অলিখিত ফাইনালে রূপ নিয়েছে। উভয় দলই সমান শক্তিশালী অবস্থানে থেকে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে।
প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৪ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গিয়েছিল মেহেদী হাসান মিরাজের দল। দ্বিতীয় ম্যাচেও বেশিরভাগ সময় নিয়ন্ত্রণে ছিল বাংলাদেশ। ২১৩ রানে ইনিংস শেষ করার পর মাত্র ১৬৩ রানে প্রতিপক্ষের সাত উইকেট তুলে নেয় তারা। কিন্তু শেষ ওভারে নাটকীয়ভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ ও শেষ ব্যাটার খ্যারি পিয়েরে। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল দুই রান, তখন ক্যাচ মিসের সুযোগে ম্যাচ টাই হয়ে যায়, আর বাংলাদেশ হাতছাড়া করে জয়ের সুবর্ণ সুযোগ।
সুপার ওভারে ব্যাট হাতে হোপ ও পিয়েরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয় এনে দেন, যা তাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়েছে। ম্যাচ শেষে ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ বলেন, কঠিন পরিস্থিতিতেও দল যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা তাদের মানসিক দৃঢ়তা প্রমাণ করে। তিনি আরও যোগ করেন, “এই অভিজ্ঞতা আমাদের তৃতীয় ম্যাচে সাহায্য করবে। বাংলাদেশ শক্ত প্রতিপক্ষ, তবে আমরা নিজেদের খেলায় মনোযোগী।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ আশাবাদী, শেষ ম্যাচে দল ঘুরে দাঁড়াবে। তার ভাষায়, “শেষ বলে যদি ক্যাচটা ধরা যেত, জয়টা আমাদেরই হতো। কিন্তু ক্রিকেটে ভুল হতেই পারে। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য—শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়া।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচে মানসিকভাবে শক্ত অবস্থানে থাকবে ক্যারিবীয়রা, তবে ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে হালকা ভাবে দেখার সুযোগ নেই। বিশেষ করে রিশাদ হোসেন, তাওহিদ হৃদয় ও তানজিদ হাসানের পারফরম্যান্স টাইগারদের জন্য বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখন পর্যন্ত ৪৯ ম্যাচে তারা জয় পেয়েছে ২৫টিতে, আর বাংলাদেশ জিতেছে ২২টিতে; দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল। তবু সাম্প্রতিক ফর্মে বাংলাদেশ এগিয়ে।
আজকের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে, বাংলাদেশ দলে মুস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে সুযোগ দেওয়া হতে পারে। এছাড়া লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং ফর্মও আজকের ম্যাচে নির্ধারণী ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশ দলের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য—শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়া এবং ঘরের মাঠে জয় দিয়ে আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধার করা। অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজও চাইবে সিরিজ জিতে দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ নিতে। সব মিলিয়ে মিরপুরের আজকের লড়াই রোমাঞ্চে ভরপুর এক অলিখিত ফাইনাল হতে যাচ্ছে।
সিএ/এমআর