২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে উত্তেজনা বাড়ছে ফুটবল বিশ্বে। আগামী ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডার যৌথ আয়োজনে বসবে ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। তবে এই যাত্রায় লিওনেল মেসির অংশগ্রহণ এখনও নিশ্চিত নয়, যা ঘিরে আলোচনা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি এরই মধ্যে পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলেছেন। তার ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য আসে সর্বশেষ ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে, যেখানে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট ফেরে আলবিসেলেস্তেদের মাথায়।
তবে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে মেসি এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি। একাধিকবার তিনি বলেছেন, নিজের শারীরিক অবস্থা ও ফিটনেসের ওপর নির্ভর করেই দিনে দিনে সিদ্ধান্ত নেবেন। এই অনিশ্চয়তাকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী তারকা থমাস মুলার।
ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের হয়ে খেলা মুলার স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘মেসি খেললে আর্জেন্টিনার শক্তির ভারসাম্যই বদলে যেতে পারে।’
ম্যাজেন্টা টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুলার বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে আর্জেন্টিনা এই মুহূর্তে শিরোপার অন্যতম বড় দাবিদার। যদি মেসি সেখানে থাকে, তাহলে সেটি নিঃসন্দেহে দারুণ একটি প্রকল্প হবে। তবে একই সঙ্গে সেটি দলের পুরো ভারসাম্য বদলে দিতে পারে- ভালো বা খারাপ, দুইভাবেই।’
মুলারের এই মন্তব্যকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ মাঠে মেসির বিপক্ষে তার অভিজ্ঞতা দীর্ঘ। দুজনের মুখোমুখি লড়াই হয়েছে ১১ বার, যেখানে সাতবার জয় পেয়েছেন মুলার, আর চারবার জিতেছেন মেসি।
মেসি-মুলার দ্বৈরথে জার্মান তারকার কিছু স্মরণীয় জয় রয়েছে। ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানি ১-০ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে। ২০১০ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকায় আর্জেন্টিনাকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে জার্মানি। আবার ২০২০ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখের ঐতিহাসিক ৮-২ গোলের ম্যাচটিও ছিল মুলারের ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে মেসির জয়ও রয়েছে এই দ্বৈরথে। গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) চেজ স্টেডিয়ামে ইন্টার মিয়ামি ৩-১ গোলে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসকে হারিয়ে ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমএলএস শিরোপা জেতে, যেখানে মুলার ছিলেন পরাজিত দলে।
মেসি যদি ২০২৬ বিশ্বকাপে মাঠে নামেন, তাহলে তিনি ফুটবল ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ছয়টি বিশ্বকাপে অংশ নেবেন। এর আগে এই কীর্তি গড়েছেন শুধু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
মুলারের মতে, মেসির উপস্থিতি আর্জেন্টিনাকে আরও ভয়ংকর করে তুলতে পারে, তবে বয়স ও ফিটনেসের বিষয়টি দলের কৌশল ও ভারসাম্যে ভিন্ন প্রভাবও ফেলতে পারে।
এদিকে জার্মান জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়া মুলার ২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজের দেশকেও সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম লক্ষ্য অবশ্যই গ্রুপ পর্ব পেরুনো। নামগুলো দেখলে মনে হয় সেটা করতেই হবে।’
তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, কুরাসাও সম্পর্কে তার খুব বেশি ধারণা নেই। আইভরি কোস্ট আফ্রিকার চ্যাম্পিয়ন এবং ইকুয়েডর দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে রানার্সআপ হওয়ায় কোনো দলকেই অবহেলা করার সুযোগ নেই।
২০২৬ বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘জে’তে পড়েছে আর্জেন্টিনা। এই গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রিয়া, আলজেরিয়া ও জর্ডান।
আর্জেন্টিনার ম্যাচ সূচি অনুযায়ী, ১৬ জুন মঙ্গলবার আলজেরিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা। ২২ জুন সোমবার অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে এবং ২৬ জুন শুক্রবার জর্ডানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা।
সিএ/বিই


