বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি এখন আলোচনার প্রধান বিষয়। গুগল, ওপেনএআই, এনভিডিয়া—এই সব কোম্পানি এআইয়ে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার চেষ্টা করছে। এই দৌড়ে পিছিয়ে নেই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা। তবে তাদের বিশাল বাজি এখন উদ্বেগের কারণ হিসেবে উঠেছে।
মার্ক জুকারবার্গের নেতৃত্বাধীন মেটা এআই অবকাঠামো গড়তে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিশাল ডেটা সেন্টার নির্মাণ করছে। আগামী তিন বছরে শুধু এ খাতে ব্যয় হবে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি প্রকাশিত ত্রৈমাসিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় মেটার অপারেটিং খরচ বেড়েছে সাত বিলিয়ন ডলার এবং মূলধনী ব্যয় প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।
জুকারবার্গ বলেছেন, “আমরা এমন একটি অবস্থায় যেতে চাই, যেখানে মেটার নিজস্ব শক্তিশালী এআই মডেল তৈরি হবে, যা অন্য কোথাও নেই।” তবে এই ব্যাখ্যায় বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হননি। প্রতিবেদনের দিন থেকেই মেটার শেয়ারমূল্য হুড়মুড় করে নামতে শুরু করে এবং দুই দিনের মধ্যে কোম্পানির বাজারমূল্য ২০০ বিলিয়ন ডলার কমে যায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মেটার সমস্যার মূল কারণ হলো বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরও তারা এখনও কোনো দৃশ্যমান বাণিজ্যিক এআই পণ্য বাজারে আনতে পারেনি। গুগল বা ওপেনএআইয়ের মতো তাদের কোনো সফল পণ্য নেই যা আয় বাড়াতে পারে।
মেটার সবচেয়ে আলোচিত এআই পণ্য মেটা এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট। এটি এক বিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারীকে সেবা দিচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্যবহারকারীর সংখ্যা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের বিশাল ব্যবহারকারীভিত্তির কারণে, এবং এটি এখনো চ্যাটজিপিটির মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী নয়।
জুকারবার্গ জানিয়েছেন, মেটার ল্যাব থেকে তৈরি নতুন মডেলগুলো শিগগিরই বড় পরিবর্তন আনবে। তবে কখন তা বাজারে আসবে, সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া হয়নি।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মেটা এখন এক সংকটমুখী সময়ে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে, কিন্তু এখনো নিশ্চিত নয় তারা ঠিক কোন ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করবে—বিজ্ঞাপন, ব্যবসায়িক সেবা নাকি ভোক্তাপ্রযুক্তি খাতে।
এক কথায়, এআই প্রযুক্তিতে বড় বাজি ধরেছে মেটা। তবে সেই ভবিষ্যৎ আসবে কখন এবং কীভাবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
সিএ/এমআরএফ

                                    
