পুরুষ মুসলমানের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা বাকারা: ৪৩) নবী করিম (স.) বলেন- ‘জামাতে নামাজ একাকী নামাজের চেয়ে সাতাশ গুণ বেশি সওয়াবের।’ (সহিহ বুখারি: ৬৪৫)
তবে জামাতে নামাজের সময় অনেকেই কিছু সাধারণ ভুল করে থাকেন, যা নামাজের খুশু ও সওয়াবের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সেগুলো হলো-
১. কাতার সোজা না রাখা
কাতার সোজা করে দাঁড়ানো জামাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। নবী করিম (স.) বলেছেন- ‘তোমরা অবশ্যই তোমাদের কাতার সোজা করবে, না হলে আল্লাহ তোমাদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি করে দেবেন।’ (সহিহ বুখারি: ৭১৭) সোজা কাতার নামাজে শৃঙ্খলা ও ঐক্য রক্ষা করে।
২. সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পেছনে দাঁড়ানো
অনেকে সামনের জায়গা থাকা সত্ত্বেও পেছনে দাঁড়ান, যা সুন্নাহর বিরুদ্ধে। নবী করিম (স.) বলেছেন- ‘তোমরা সামনের কাতার আগে পূর্ণ করবে, তারপর পরবর্তী কাতার।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৬৭১) সামনের কাতার পূর্ণ করলে জামাতে একরূপতা বজায় থাকে।
৩. কাতারের মাঝে ফাঁক রাখা
কাতারের মধ্যে ফাঁক রাখা নিষিদ্ধ। নবী করিম (স.) বলেন- ‘‘তোমরা কাতারে পরস্পর মিশে দাঁড়াও। কাতারগুলোকে পরস্পর নিকটবর্তী রাখো এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াও। যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, আমি শয়তানকে দেখছি ছোট ছোট বকরির মতো কাতারের মধ্যে প্রবেশ করছে।’ (নাসায়ি: ৮১৫) ফাঁক রাখা শয়তানের প্রভাব বাড়ায় এবং জামাতের ঐক্য নষ্ট করে।
৪. ইমামের আগে রুকু বা সেজদা করা
ইমামের আগে রুকু বা সেজদা করা গুরুতর ভুল। নবী করিম (স.) বলেছেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে অনুসরণ করার জন্য। তাই ইমামের রুকু বা সেজদার সময় তার অনুসরণ করতে হবে। (সহিহ মুসলিম: ৪১২)
৫. অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া করা
নামাজের সময় কাপড়, চুল, হাত বা মোবাইল স্পর্শ করা খুশু নষ্ট করে এবং ইবাদতের মান কমায়।
জামাতে নামাজ মুসলিম সমাজের ঐক্য, শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তি। উপরোক্ত ভুলগুলো এড়িয়ে সুন্নাহ অনুযায়ী নামাজ আদায় করলে আমরা জামাতের প্রকৃত সৌন্দর্য অর্জন করতে পারব এবং আল্লাহর নিকট অধিক সওয়াব লাভ করব। আল্লাহ আমাদের সবাইকে জামাতে নামাজের হক আদায় করার তাওফিক দিন। আমিন।
সিএ/ইরি


