শীত এলেই গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে খেজুরের রস। শীত যত বাড়ে, ততই বাড়তে থাকে এই রসের চাহিদা। স্বাদে অতুলনীয় এই খেজুরের রস শুধু মুখরোচকই নয়, পুষ্টিগুণের দিক থেকেও অত্যন্ত উপকারী বলে জানান চিকিৎসকরা।
খেজুরের রস মূলত ভোর হওয়ার আগেই গাছ থেকে সংগ্রহ করে খেতে হয়। সূর্যের আলো পড়ার আগের রসই সবচেয়ে ভালো ও নিরাপদ বলে মনে করা হয়। এই কাঁচা রস সরাসরি পান করা যায়, আবার জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় নলেন গুড়, যা শীতকালীন পিঠা, পায়েস ও বিভিন্ন মিষ্টান্নের স্বাদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
চিকিৎসকদের মতে, খেজুরের রস ও গুড়—দুটোই শরীরের জন্য উপকারী। বিশেষ করে খেজুরের গুড়ে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। যাঁরা শারীরিক দুর্বলতায় ভোগেন বা কাজকর্মে দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাঁদের জন্য খেজুরের রস বেশ কার্যকর।
আখের গুড়ের তুলনায় খেজুরের গুড় বেশি মিষ্টি এবং পুষ্টিগুণেও এগিয়ে। এতে প্রোটিন, ফ্যাট ও বিভিন্ন খনিজ উপাদান থাকে, যা শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ কারণে চিকিৎসকরা খেজুরের রসকে প্রাকৃতিক ‘এনার্জি ড্রিংক’ হিসেবেও উল্লেখ করেন। এতে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকায় দ্রুত শক্তি জোগায়।
একজন সুস্থ মানুষ সকালে এক থেকে দুই গ্লাস খেজুরের রস পান করতে পারেন। খালি পেটেও এটি খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খেজুরের রস ও গুড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে খেজুরের রস খাওয়ার সময় সতর্ক থাকার কথাও বলেন চিকিৎসকরা। খোলা অবস্থায় গাছ থেকে সংগ্রহ করার কারণে রসে জীবাণু থাকতে পারে। বিশেষ করে বাদুড় বা পাখির মুখ দেওয়া রস পান করলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই রস সংগ্রহের পর হালকা আঁচে ফুটিয়ে নিয়ে খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
সিএ/এএ


