শীতকালে অনেকেই পানির খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেন। অনেকে মনে করেন, শীতে পানি কম খেলে বাথরুমে কম যেতে হবে, আবার কেউ কেউ মনে করেন অন্তত ৩–৪ লিটার পানি খেতে হবে না হলে শরীর ডিহাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে। তবে আসল সত্য হলো, শীতকালে শরীরের পানি চাহিদা নির্ভর করে ব্যক্তির শরীরের কার্যকলাপ, অবস্থান এবং জলবায়ুর ওপর।
শীতকালে ঘামের পরিমাণ কমে যায়। ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার প্রধান পথ হয় প্রস্রাব। শীতে ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে ইউরোলজিস্টরা বলেন, শীতকালে বাথরুমে বারবার যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। একই সঙ্গে শীতে চা-কফির গ্রহণ বৃদ্ধি পায়, যা ডিহাইড্রেশন ঘটাতে পারে। সাধারণ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যাদের শীতে বেশি ঘাম হয়, তাদের অবশ্যই বেশি পানি খাওয়া উচিত।
শীতকালে পানি কম খেলে সাধারণভাবে কোনো গুরুতর সমস্যা হয় না। গরমকালে ঘামের মাধ্যমে যে পরিমাণ পানি হারায়, শীতকালে তা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি থাকে। তবে যাঁরা শারীরিকভাবে প্রচণ্ড পরিশ্রম করেন বা ব্যায়াম করেন, তাদের অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
সাধারণত বাংলাদেশে আর্দ্র জলবায়ু বিবেচনা করে দিনে ৩–৪ লিটার পানি পান করা উচিত। শীতে সামান্য কম খাওয়া চলবে, তবে দীর্ঘ সময় পানি কম খেলে কিডনিতে পাথর (স্টোন) তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কিডনিতে পাথর তৈরি মূলত ডিহাইড্রেশনের কারণে ঘটে। শরীর যথেষ্ট হাইড্রেটেড না থাকলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলো সহজেই বোঝা যায়:
- গাঢ় হলুদ প্রস্রাব
- প্রস্রাবে তীব্র গন্ধ
- অল্প কাজ করেও ক্লান্তি
- মুখ, চামড়া ও ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া
- ঠোঁট ফাটাজীব শুকিয়ে যাওয়া
- মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা
- প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
- প্রস্রাবের সময় জ্বালা অনুভব হওয়া
এমন লক্ষণ দেখা দিলে পানি পান বাড়ানো জরুরি। পর্যাপ্ত পানি শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখে, কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
সিএ/এমআরএফ


