বাংলা সাহিত্যের অনন্য কথাসাহিত্যিক, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের আজ ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। দেশের সাহিত্য, নাটক ও চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে স্মরণ করছে গোটা জাতি। তার ভক্ত ও বিভিন্ন সংগঠন আজ নানা আয়োজনে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জন্ম নেওয়া হুমায়ূন আহমেদ শিক্ষকতা থেকে শুরু করে সাহিত্য ও চলচ্চিত্র—সবক্ষেত্রেই রেখেছেন সৃজনশীলতার অমোঘ ছাপ। তিনি গল্প বলার ধরন, সংলাপের বাস্তবতা ও চরিত্রচিত্রণে এমন এক জগৎ তৈরি করেছিলেন, যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে গেছে।
তার লেখা উপন্যাসগুলোতে দেখা মেলে জীবনের সরলতা, হাস্যরস, প্রেম, বেদনা ও গভীর মানবিকতার। ‘নন্দিত নরকে’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘দেয়াল’, ‘অপেক্ষা’, ‘কৃষ্ণপক্ষ’সহ অসংখ্য উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে। তার সৃষ্ট বিখ্যাত চরিত্রগুলো—‘হিমু’ ও ‘মিসির আলি’—আজও পাঠকদের হৃদয়ে অম্লান।
চলচ্চিত্রে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন এক নবজাগরণের কারিগর। ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘আমার আছে জল’, ‘ঘেঁটু পুত্র কমলা’—এসব চলচ্চিত্র শুধু গল্প নয়, দেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও মানবিক মূল্যবোধকে নতুনভাবে তুলে ধরেছে। তিনি দেখিয়েছেন, বাস্তব জীবনের সহজ কাহিনিও হতে পারে গভীর ও হৃদয়স্পর্শী শিল্প।
বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে হুমায়ূন আহমেদের প্রভাব এখনও প্রবল। তার লেখা নাটক, উপন্যাস ও সিনেমা আজও নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। মৃত্যুর এক দশক পরেও তার কাজের আবেদন কমেনি, বরং সময়ের সঙ্গে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
সিএ/এমআরএফ


