এলনাজ নরৌজি বলিউডে নিজের মতের ওপর ভর করে সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পরিচিত। তিনি শুরু থেকেই বিশ্বাস করেন, চমক নয়, চিত্রনাট্যই শেষ কথা। তাই পর্দায় অন্তরঙ্গ বা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়েও তাঁর অবস্থান স্পষ্ট—শুধু দেখানোর জন্য নয়, সত্যিকারের প্রয়োজনে করতে হবে।
এক সাক্ষাৎকারে এলনাজ জানান, পর্দায় ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের সিদ্ধান্ত কখনোই সহজ নয়। তিনি আগে বিবেচনা করেন, দৃশ্যটি কতটা প্রয়োজনীয়। তাঁর ভাষায়, “চুমুর দৃশ্য হোক বা চূড়ান্ত ঘনিষ্ঠ দৃশ্য—দেখি গল্পের জন্য কতটা জরুরি? চরিত্র বা পরিস্থিতি বদলায়? এই বিষয়টি গল্পকে কীভাবে এগিয়ে নেবে? যদি এগোয়, তবে এসব দৃশ্য থাকা উচিত। না হলে কেন থাকবে?” এভাবে তিনি চটকদারতার চেয়ে যুক্তি ও প্রাসঙ্গিকতাকেই প্রাধান্য দেন।
এলনাজ আরও বলেন, সুসংগঠিত টিম, সংবেদনশীল পরিচালক ও শক্তিশালী চিত্রনাট্য থাকলে অনেক জিনিসই স্পষ্ট হয়ে যায়। তবু কোনো প্রশ্ন থাকলে তিনি তা প্রকাশ করতে কোনো দ্বিধা বোধ করেন না। “এটা যৌথ কাজ, তাই প্রশ্ন থাকলে পরিচালককে বলতে পারি,” তিনি জানান।
সবচেয়ে আলোচিত তাঁর ‘স্যাক্রেড গেমস ২’-এর অভিজ্ঞতা। সেখানে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য ছিল চিত্রনাট্যে। এলনাজ সেই দৃশ্যে রাজি না হয়ে প্রজেক্টটি ছাড়ারও চিন্তা করেছিলেন। তবে পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপের সংবেদনশীল আচরণের কারণে দৃশ্যটি পাল্টে যায়। তিনি এলনাজ ও তাঁর টিমকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন, শুটিং কিভাবে হবে, কতটা নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য বজায় থাকবে, সব ব্যাখ্যা দেন।
এতে এলনাজ বোঝেন, দৃশ্যটি কেবল গল্পের প্রয়োজনেই রয়েছে এবং তাঁর স্বস্তিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত দৃশ্যটি রাখা হয়, তবে অভিনেত্রীর মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য ও সম্মান বজায় রেখে। এই অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর বক্তব্য আরও শক্তিশালী হয়—বোল্ড কন্টেন্ট মানেই চটক নয়; প্রাসঙ্গিকতা, সংবেদনশীলতা ও সম্মান থাকলেই তা অর্থবহ।
এলনাজ নরৌজি দেখিয়েছেন, ‘না’ বলার সাহস, নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকা এবং যুক্তির ওপর দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াই সত্যিকারের পেশাদারিত্ব। এটি তাঁর নীরব অথচ আত্মবিশ্বাসের মূল শক্তি।
সিএ/এএ


