সংগীত জগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ঝড় আরও তীব্র হচ্ছে। মানুষের গাওয়া গান নয়—এবার আন্তর্জাতিক টপ চার্ট দখল করছে এআই–জেনারেটেড গান। সেই সঙ্গে বাড়ছে অনুকরণ ও কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ; পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মিউজিক স্ট্রিমিং জায়ান্ট স্পটিফাইকে।
গত মাসেই এআই–তৈরি গান ‘ওয়াক মাই ওয়াক’ যুক্তরাষ্ট্রের বিলবোর্ড কান্ট্রি ডিজিটাল সং সেলস তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। মাত্র কয়েকটি প্রম্পট ব্যবহার করে তৈরি এই গান স্পটিফাইয়ে স্ট্রিম হয়েছে ৮ মিলিয়ন বারের বেশি। গানটির শিল্পী হিসেবে দেখানো হয়েছে কাউবয়ের লুকে থাকা ‘ব্রেকিং রাস্ট’ নামে এক চরিত্রকে—যার পুরো অস্তিত্বই ডিজিটালি তৈরি, কোন বাস্তব ব্যক্তি নয়।
সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় বিতর্ক। কান্ট্রি–র্যাপ তারকা ব্ল্যাংকো ব্রাউন অভিযোগ করেন, গানটির নির্মাতারা এআই ব্যবহার করে তার স্টাইল নকল করেছেন। তবে অভিযোগের জবাবে ‘ব্রেকিং রাস্ট’–এর পেছনের নির্মাতারা এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।
শুধু এটি নয়, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘কিং গিজার্ড অ্যান্ড দ্য লিজার্ড উইজার্ড’–এর নাম নকল করে স্পটিফাইয়ে হাজির হয় এআই–তৈরি একটি ব্যান্ড—‘কিং লিজার্ড উইজার্ড’। তাদের গান, আর্টওয়ার্ক—এসবই ছিল এআই–জেনারেটেড এবং নকল। বিষয়টি নজরে আসতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান মূল ব্যান্ডের সদস্যরা। পরে স্পটিফাই ব্যান্ডটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে জানায়—“শিল্পীর পরিচয় নকল করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।”
এর আগেও এআই–জেনারেটেড সঙ্গীত নিয়ে স্পটিফাইকে বহুবার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। বট–চালিত ও এআই–তৈরি ৭ কোটি ৫০ লাখের বেশি গান ইতিমধ্যেই সরিয়ে ফেলেছে তারা। ড্রেক, দ্য উইকেন্ডের কণ্ঠ নকল করে তৈরি একাধিক ভাইরাল গানও বারবার মুছে দিয়েছে। ফলে এআই মিউজিকের সীমা কোথায়—তা নিয়ন্ত্রণ করতেই সবচেয়ে বেশি চাপে স্পটিফাই।
তবে সব এআই কনটেন্টই বাদ যাচ্ছে না। যুক্তরাজ্যের টপ–৪০–এ ওঠা গান ‘আই রান’–এ প্রথমে এআই–ম্যানিপুলেটেড ভোকাল ব্যবহৃত হলেও পরে অভিযোগ উঠায় প্রকাশ করা হয় মানব কণ্ঠ সংস্করণ। শিল্পী–সংশ্লিষ্টদের মতে, এখন সবচেয়ে বড় সংকট—“কে গানটি বানিয়েছে?” এই প্রশ্নই ক্রমশ ধোঁয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে।
সিএ/এএ


