ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান তার ২৬ বছরের ক্যারিয়ারে অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তবে ২০২৩ থেকে ২০২৫—এই তিন বছর তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, টানা তিন বছরে ‘প্রিয়তমা’, ‘তুফান’ এবং ‘বরবাদ’—প্রতিটি বছরেই একটি করে ইন্ডাস্ট্রি হিট উপহার দিয়ে বিরল এক রেকর্ড গড়েছেন তিনি। দর্শক প্রতিক্রিয়া, বক্স অফিস ফলাফল, বিদেশি বাজার—সব ক্ষেত্রেই শাকিবের এই তিন ছবির প্রভাব ছিল প্রবল।
‘প্রিয়তমা’ (২০২৩): রোমান্টিক ঘরানায় নতুন ইতিহাস
হিমেল আশরাফ পরিচালিত ও আরশাদ আদনানের প্রযোজনায় নির্মিত ‘প্রিয়তমা’ মুক্তির পরপরই দেশে-বিদেশে ঝড় তোলে।
বিশ্বব্যাপী গ্রস কালেকশন: ৪২ কোটি টাকা
দীর্ঘসময় হাউসফুল শো
প্রবাসী দর্শকদের রেকর্ড সাড়া
রোমান্টিক ঘরানার এই ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও সবচেয়ে সফল সিনেমা হিসেবে ধরা হয়।
‘তুফান’ (২০২৪): অ্যাকশন–ইমোশনের নতুন সংজ্ঞা
২০২৪ সালের ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া ‘তুফান’ শাকিব খানের ইমেজে এনে দেয় বড় পরিবর্তন।
গ্রিটি লুক
উচ্চমানের অ্যাকশন
শক্তিশালী গল্প
মুক্তির পরদিন থেকেই টানা শো হাউসফুল যায়, এবং ছবিটি বছরের সবচেয়ে আলোচিত ও ব্যবসাসফল ছবির স্বীকৃতি পায়।
‘বরবাদ’ (২০২৫): বক্স অফিসে রেকর্ড ভাঙার সুনামি
২০২৫ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়ে ‘বরবাদ’ বক্স অফিসে ঝড় তোলে।
আধুনিক নির্মাণশৈলী
নতুন যুগের গল্প
শাকিব খানের পরিণত অভিনয়
প্রথম সপ্তাহেই দেশের বিভিন্ন হল থেকে রেকর্ড আয়ের খবর আসে। ‘বরবাদ’–কে অনেকে ২০২৪-২৫ সময়ের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করছেন।
এই সাফল্য বাংলা সিনেমাকে কী বার্তা দিচ্ছে?
চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদের মতে—
একটি তারকার টানা তিন বছর ইন্ডাস্ট্রি হিট দেওয়া শুধু তার ব্যক্তিগত জয় নয়; এটি পুরো ইন্ডাস্ট্রির প্রতি দর্শকের আস্থা ফিরিয়ে আনার বড় ইঙ্গিত।
দর্শক আবারও হলমুখী হচ্ছে।
নতুন বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের সিনেমার গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়ছে।
শাকিবের এই সাফল্য প্রমাণ করছে—
বাংলাদেশে এখনো তারকাখচিত মানসম্মত সিনেমার প্রতি দর্শকের আগ্রহ অটুট।
সঠিক গল্প, উপযুক্ত নির্মাণ, এবং শক্তিশালী তারকা—এই তিনের সমন্বয় ঘটলে বাংলা সিনেমা আরও বড় বাজারে জায়গা করে নিতে পারবে।
শেষ কথা
টানা তিন বছরের তিন ইন্ডাস্ট্রি হিট—
এটি শুধু শাকিব খানের ব্যক্তিগত জয়ের গল্প নয়, বরং পুরো বাংলা সিনেমার পুনর্জাগরণের প্রতীক।
এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামী দিনগুলোতে বাংলা চলচ্চিত্র আরও বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক মানে জায়গা করে নেবে—এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
সিএ/এএ


