বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি একাডেমিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে শহীদ ওসমান হাদি ও শহীদ আবরার ফাহাদের নামে নামকরণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই নামফলক স্থাপন ও ঘোষণা দেওয়া হয়।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-৩-এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহীদ ওসমান হাদি ভবন। একই সময়ে একাডেমিক ভবন-২-এর নতুন নামকরণ করা হয় শহীদ আবরার ফাহাদ ভবন। ভবন দুটির সামনে ব্যানার টানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম পরিবর্তনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
নামকরণ কর্মসূচিকে ঘিরে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় ‘তুমি কে, আমি কে, হাদি হাদি’, ‘ভারতের আধিপত্যবাদ ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা এ বাংলায় হবে না’, ‘ভারতের দালালরা হুঁশিয়ার-সাবধান’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। পাশাপাশি, শহীদ ওসমান হাদি ও শহীদ আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিও জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শহীদ ওসমান হাদি ও শহীদ আবরার ফাহাদ আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক। তাদের আত্মত্যাগ ও আদর্শ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে চিরস্মরণীয় করে রাখতে এই নামকরণ করা হয়েছে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা সবসময় ন্যায় ও প্রতিবাদের প্রেরণা পায়।
নামকরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী আহমাদুল হক আলবীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ডিগ্রি অর্জনের স্থান নয়। এখান থেকেই ন্যায়, প্রতিবাদ ও মানবিকতার শিক্ষা ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের নামকরণের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সে বার্তাই পৌঁছে দিতে চেয়েছি।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, শহীদ আবরার ফাহাদ ও শহীদ ওসমান হাদি এ দুজনই ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সেই স্মৃতি ও চেতনা ধরে রাখতেই তাদের নামে ভবন দুটির নামকরণ করলাম।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার বুয়েটের শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে, চলতি বছরের ১২ ডিসেম্বর জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। পরবর্তী সময়ে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সিএ/জেএইচ


