বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি বা মুনাফা দ্রুত ও ঝামেলামুক্তভাবে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করতে জাতীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে। এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে। দীর্ঘদিন কারিগরি আলোচনা ও বিশেষজ্ঞ, ব্যাংকার, আইনজীবী ও মূল্যায়নকারী সংস্থার মতামত সংগ্রহের পর চূড়ান্ত প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিডার নির্বাহী সদস্য ও কমিটির প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি সুপারিশগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সামনে উপস্থাপন করেন। কমিটি গঠন হয়েছিল ২৯ সেপ্টেম্বর, উদ্দেশ্য ছিল বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়ায় যে জটিলতা ও বিলম্ব রয়েছে তা দূর করা এবং একটি আধুনিক ব্যবস্থা তৈরি করা।
জাতীয় কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি দায়িত্ব দেওয়া হোক যাতে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই অধিকাংশ আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারে। এছাড়া অর্থ ফেরতের সেবায় সময়সীমা নির্ধারণ করে তা বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি কোম্পানিগুলোর জন্য অতিরিক্ত নথিপত্রের প্রয়োজন কমানো, আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন মানদণ্ড অন্তর্ভুক্ত করে নিয়মকানুন হালনাগাদ করা, জটিল বা মতবিরোধপূর্ণ আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পৃথক পর্যালোচনা কমিটি গঠন এবং ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুপারিশও দেওয়া হয়েছে।
দ্রুত বিকাশমান ব্যবসা ও নতুন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আলাদা নীতিমালা তৈরি, জাতীয় মূল্যায়ন সংস্থা গঠন, ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও জনবল বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও সুপারিশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, সুপারিশগুলো দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি আরও স্পষ্ট করেছে। তিনি জানান, সময়ক্ষেপণ কমিয়ে স্বচ্ছতা বাড়াতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগে আস্থা বাড়াতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ, দ্রুত ও কার্যকর হবে।
সিএ/এমআরএফ


