দেশের ব্যবসায়ীদের চেয়ে বিদেশিদের কথায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, দেশের শিল্প খাত নানা সমস্যার মুখে পড়লেও সরকার তাদের কথা শোনার পরিবর্তে বিদেশি পক্ষগুলোর পরামর্শকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্স ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বিকেএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সমস্যাগুলো সরকারকে জানাতে চাইলেও বারবার ব্যর্থ হয়েছি।’
চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বাড়ানো প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “এই বন্দর প্রতিবছরই মুনাফা করছে। সর্বশেষ অর্থবছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার মুনাফা হয়েছে। তবুও সরকার একলাফে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়িয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি বিদেশি পক্ষ বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নেয়, তাহলে ব্যয় কমার কথা, উল্টো কেন খরচ বাড়ানো হচ্ছে?”
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু অভিযোগ করেন, গত চার মাসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার জন্য বারবার চেষ্টা করেও তারা সাক্ষাৎ পাননি। তিনি বলেন, “যে কোম্পানি ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়, তার প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করতে সময় দেন, কিন্তু ৪০ বিলিয়ন ডলারের খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন না।”
তিনি আরও বলেন, দেশের উৎপাদনমুখী শিল্প খাত বর্তমানে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে, যা ব্যবসায়ী মহলে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
শ্রম আইন সংশোধন প্রসঙ্গে মাহমুদ হাসান খান বলেন, “আগে আলোচনার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, যেখানে ৫০ থেকে ৫০০ শ্রমিকের কারখানায় ৫০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ ছিল। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ তা পরিবর্তন করে মাত্র ২০ জনের অনুমতিতে ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ দিয়েছে।”
তার মতে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবতা বিবর্জিত এবং এতে শিল্পক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে। “মাত্র ২০ জন শ্রমিক দিয়ে ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ দিলে এমন ব্যক্তিরা ট্রেড ইউনিয়ন করবে, যারা ওই শিল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমবে এবং উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন,” যোগ করেন তিনি।
সিএ/এমআর


