রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ইসলামী ছাত্রশিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, বর্তমান সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলছে এবং তাদের দোসররা এখনও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ৩০ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বড় মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তার রাবির ভাইরা সেইদিন সকল বাধা অতিক্রম করে রাস্তায় নেমেছিলেন, যার প্রভাব পরে সারাদেশের রাস্তায় দেখা গিয়েছিল।
সাদিক কায়েম আরও উল্লেখ করেন, জুলাইবিপ্লবে রাজশাহী মহানগরের ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ আলী রায়হানও শহীদ হয়েছেন। তিনি বলেন, “আজ আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষা ভুলে যাচ্ছি। ছাত্রসংগঠনগুলোতে দাম্ভিকতার উপস্থিতি বেড়ে গেছে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জুলাইয়ের স্পিরিট ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ গঠনে আমাদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ অব্যাহত রাখতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো আজ ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলছে এবং তাদের দোসররা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। তাই আমরা বলতে চাই, আপনারা খুনি হাসিনা ও তার দোসরের মতো ভুল করবেন না। যদি কেউ নব্য ফ্যাসিস্ট হতে চায়, আমরা জুলাইয়ের মতো আবার রাস্তায় নামব।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেন, “খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের যেখানে পাওয়া যাবে, তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। তারা রাজনৈতিক দল নয়—তারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।”
রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ ১৯৮২ সালের ১১ মার্চের ঘটনা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, সেই নবীনবরণ অনুষ্ঠান করতে গিয়ে চার ভাই শহীদ হন—সাব্বির ভাই, হামিদ ভাই, আইয়ুব ভাই এবং জব্বার ভাই। তারা ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রথম শহীদ হিসেবে বিবেচিত।
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালের পর এবারই প্রথম রাবি ক্যাম্পাসে এত বড় নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হলো। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ডাকসু ও চাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, ইব্রাহিম হোসেন রনি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তৃতা দেন।
এই অনুষ্ঠানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার নবীন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
সিএ/এমআরএফ


