জুলাই যোদ্ধাদের ‘স্বৈরাচারের দোসর’ বলা গুরুতর অসৌজন্যতা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যারা জীবন বাজি রেখে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তাদের প্রতি এমন অবমাননাকর মন্তব্য করা জাতির প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের শামিল।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে জামায়াত আমির লেখেন, “জুলাই যোদ্ধাদের স্বৈরাচারের দোসর বলাটা গুরুতর অসৌজন্যতা হিসেবেই বিবেচিত হবে। দয়া করে দায়িত্বশীল কোনো জায়গা থেকে—জীবন বাজি রেখে লড়াই করা জাতির গর্বিত লোকগুলোর ব্যাপারে এমন কথা বলব না।”
তিনি আরও বলেন, “যে কেউ এমন আচরণ করলে জাতি তাদের ক্ষমা করবে না। আমাদের উচিত হবে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া এবং পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখা।”
তার এই প্রতিক্রিয়া আসে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের মধ্যে সাম্প্রতিক বাকবিতণ্ডার প্রেক্ষিতে। গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জুলাই সনদ স্বাক্ষরের দিন ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। তিন দফা দাবি নিয়ে তারা অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ জোরপূর্বক তাদের সরিয়ে দিলে সেই মঞ্চেই বিএনপি, জামায়াতসহ ২৪ দলের নেতারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেন।
এরপর শনিবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক ঢুকে বিশৃঙ্খলা করেছে। এটি তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা মনে করি, ফ্যাসিস্ট সরকারের বাহিনীই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”
তার এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় এনসিপি। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “সালাহউদ্দিন আহমেদ হয়তো তখন দেশে ছিলেন না, তাই তিনি বুঝতে পারেননি কে রাজপথে ছিল, কে লড়াই করেছিল, কারা বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল।” তিনি সালাহউদ্দিনকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে জুলাই যোদ্ধাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
পরে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমার বক্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে। আমি কোথাও জুলাই যোদ্ধাদের আওয়ামী লীগের দোসর বলিনি। বিষয়টি সম্পূর্ণ অপব্যাখ্যা।”
সিএ/এমআর