বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদীয় নির্বাচনের সময় তিনি বাংলাদেশে থাকবেন এবং নির্বাচনে অংশ নেবেন। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গত প্রায় দুই দশকের মধ্যে প্রথমবার মুখ খুলে তিনি বলেন, প্রত্যাশিত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে জনগণের মাঝে থেকেই সেই নির্বাচনকে অংশগ্রহণ করবে তিনি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই ফিরে আসব’—এমন ইঙ্গিতও দেন এবং নির্বাচনকে নিয়ে তার আগ্রহ ও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
তারেক উল্লেখ করেন, শারীরিকভাবে তিনি বিদেশেই থাকলেও মানসিকভাবে গত ১৭ বছর ধরে তিনি বাংলাদেশেই নিয়মিত সক্রিয় রয়েছেন। তিনি বলেন, বহুদিন ধরে মিডিয়ায় সরাসরি কথা বলার সুযোগে বাঁধা ছিল—হাইকোর্টের আগে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের বার্তা প্রকাশে সীমাবদ্ধতা ছিল। তবে গত বছরের ২২ আগস্ট সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর তিনি বলেন, প্রকাশ্যে কথা বলার সুযোগ বেড়েছে এবং তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য পথেও মানুষের কাছে তাঁর বক্তব্য পৌছে দিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া মানবিক ও রাজনৈতিক নির্যাতন এবং প্রভাব সম্পর্কে কথাও তুলে ধরেন। প্রাক্তন সরকারের সময় পরিবারের সদস্যর ওপর যে নির্যাতন ও হানাহানি হয়েছিল, তা বর্ণনা করে তিনি বলেন, এসব অন্যায়ের বিচার হবে—এটি প্রতিশোধ নয়, আইনের আওতায় ন্যায় প্রতিষ্ঠার এক পথ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অন্যায় করলে ব্যক্তি কিংবা দল—আইনের সামনে বিচারের অন্যথা নেই।
আওয়ামী লীগ সম্পর্কেও তারেক বলেন, যদি কোনো দল বা ব্যক্তি অন্যায় করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদ্ধতিতে বিচার হওয়া উচিত। তিনি বলেন, জনগণের বিচারকত্বকে গুরুত্ব দেন এবং বিশ্বাস ভাগাভাগি করে দলের অস্তিত্ব বিচারহীন নয়—জনগণই শেষ বিচারক।
জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেসব দল আইনের মধ্যে থেকে রাজনীতি করবে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার আছে; বিএনপি বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং সকলকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানায়।
তারেক রহমান ২০০৮ সালে লন্ডনে গিয়ে বসবাস শুরু করেন এবং দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিভূত মামলাসমূহের বিষয়েও আলোচনা হয়। তিনি জানান, গত বছরের অভ্যুত্থানের পর আইনি প্রক্রিয়ায় সব অভিযোগ থেকে তিনি সরাসরি অব্যাহতি পেয়েছেন এবং বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো পেন্ডিং মামলা নেই।
সাক্ষাৎকারে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সরাসরি প্রশ্নে তিনি ‘জ্বি.. ইনশাআল্লাহ’ উত্তর দেন—যার মানে, অংশ নেবেন বলেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সিএ/এমআরএফ