ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে সব সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্বাচন সংক্রান্ত সব কার্যক্রম নির্বিঘ্নভাবে সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্টদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। পরিপত্রে জানানো হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ এবং গণভোট একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্য সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অনুরোধ অনুযায়ী সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ সার্বিক সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতাধীন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর ও প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠান থেকেও জনবল নেওয়া হতে পারে।
এছাড়া সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগসহ নির্বাচনের বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার এবং আসবাবপত্র নির্বাচন কাজে ব্যবহারের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, নির্বাচন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। অতীতের মতো এবারও তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচনী কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ কার্যকর রয়েছে বলেও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত হলে তিনি নিয়োগের তারিখ থেকে দায়িত্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে কর্মরত বলে গণ্য হবেন। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবেন এবং তাদের সব আইনানুগ নির্দেশ মানতে বাধ্য থাকবেন। নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্বই এ সময় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।
সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করা সবার অবশ্যপালনীয় দায়িত্ব বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৪৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্যত্র বদলি করা যাবে না।
এ অবস্থায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতিও অনুরূপ নির্দেশ জারির কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনী কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি, বদলি বা দায়িত্ব পরিবর্তন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
সিএ/এএ


