ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। ওই মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আব্দুল হান্নান (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পুলিশ ও র্যাব সূত্র জানায়, যে মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়েছিল, সেটির মালিক সন্দেহে আব্দুল হান্নানকে আটক করে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, আব্দুল হান্নানের বাবার নাম আব্দুল করিম। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান এলাকার বাসিন্দা।
র্যাব-২-এর উপপরিদর্শক (এসআই) বিপ্লব বড়ই জানান, গুলিবর্ষণের ঘটনায় একটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নান। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে—এমন সন্দেহে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান বলেন, র্যাব-২ আব্দুল হান্নানকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে ওসি জানান, র্যাব শুধু আব্দুল হান্নানকে হস্তান্তর করেছে। মোটরসাইকেল এখনো উদ্ধার হয়নি।
এদিকে, ডিজিটাল অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম দ্য ডিসেন্ট দাবি করেছে, হাদির ওপর গুলির ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদকে বহন করা মোটরসাইকেল চালককে তারা শনাক্ত করেছে। সংবাদমাধ্যমটির তথ্য অনুযায়ী, ওই চালকের নাম আলমগীর হোসেন। তার ফেসবুক আইডির নাম ‘মোহাম্মদ আলমগীর শেখ’।
দ্য ডিসেন্ট জানায়, আলমগীর হোসেন নিয়মিত তার ফেসবুক পোস্টের জিওট্যাগে মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকার ‘সুনিবিড় হাউজিং’-এর নাম ব্যবহার করতেন। তার ফেসবুক প্রোফাইলে থাকা ছবির সঙ্গে শরিফ ওসমান হাদির নির্বাচনী গণসংযোগের সময় গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ও শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) তোলা কিছু ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় হাদির নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত ছিলেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের দাবি করেছেন, হাদির ওপর গুলির ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী মোটরসাইকেল চালক আলমগীর হোসেন শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব ভারতে তাদের সহায়তা করছেন। বিপ্লবের তত্ত্বাবধানে এই হত্যাচেষ্টায় জড়িত ব্যক্তিরা ভারতে অবস্থান করছেন।’
এদিকে, শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। জাতীয় সংসদের ঢাকা-৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালানোর সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন রাত থেকেই তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সূত্র: পুলিশ, র্যাব ও সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম
সিএ/এএ


