বিশ্বজুড়ে তরুণদের তাদের কাঙ্ক্ষিত পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, তরুণরা কেবল বর্তমান পৃথিবীতে নিজেদের খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা না করে, বরং নিজের মতো করে কেমন পৃথিবী তারা চায়—সেটি নিয়ে স্বপ্ন লালন করবে। সমাজ গঠনের ক্ষমতার ওপর জোর দিয়ে তাদের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য সাহসী হতে হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সুইডেন ও নরওয়ের তরুণ সংসদ সদস্যদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, “অনেকে বলে, তরুণরাই ভবিষ্যৎ—আমি বলি, তরুণরাই বর্তমান। আজকের তরুণরা প্রযুক্তির সঙ্গে বেড়ে ওঠার কারণে এক নতুন ধরনের মানুষ—‘অতিমানব’। তোমাদের কাছে প্রশ্ন হতে হবে, ‘আমি কেমন পৃথিবী তৈরি করতে চাই?’ এবং সেটিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে, কারণ তোমাদের হাতে সব উপকরণ রয়েছে।”
বৈঠকে তরুণ প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, জুলাই বিপ্লব এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কিত প্রশ্ন করেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “জুলাই বিপ্লবের তরুণরা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দাবি তুলেছিল, বিশেষ করে সংবিধান সংশোধনের, যা ফ্যাসিবাদের মূল উৎস হিসেবে দেখা হয়েছিল। আমরা কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করেছি। এই মাসে ‘জুলাই সনদ’-এ স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে, যা ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
তিনি তরুণ নেতাদের বাংলাদেশকে কাছ থেকে দেখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের প্রতিটি রাস্তা একটি গল্প বলে। দেয়ালের গ্রাফিতি, দেয়ালচিত্র ও লেখা—সবকিছু মিলিয়ে হাঁটা যায় এক জীবন্ত জাদুঘরে, যেখানে তরুণদের প্রতিরোধ ও স্বপ্নের ইতিহাস লিপিবদ্ধ।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূসের “তিন শূন্যের তত্ত্ব”ও তুলে ধরা হয়। এটি একটি নতুন সভ্যতা তৈরির লক্ষ্যে তৈরি, যার লক্ষ্য উদ্যোক্তা উপায়ে সামাজিক সমস্যা সমাধান করা। তিনটি শূন্য হলো:
- শূন্য নেট কার্বন নির্গমন
- দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ
- সকলের মধ্যে উদ্যোক্তা তৈরি করে শূন্য বেকারত্ব
সিএ/এমআর