বাংলাদেশের সংবিধানে আবারও ফিরল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে এই ব্যবস্থাকে বহাল রাখার রায় দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, আগামি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে; তবে চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। এই রায়ের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচন ব্যবস্থায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিচালনার সাংবিধানিক ভিত্তি স্থাপিত হলো।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি আদালতে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছিল এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নানা অস্বাভাবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছিল।
১৯৯৬ সালে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এর বৈধতা নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ ওঠে। হাইকোর্ট ২০০৪ সালে এ ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করলেও, আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের পথ তৈরি হয়।
সরকার পরিবর্তনের পর আবারও এই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়। ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আলাদাভাবে আপিল করেন। বিভিন্ন শুনানির পর শেষ পর্যন্ত আজকের এ ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করল আপিল বিভাগ।
জাতীয় নির্বাচন ব্যবস্থায় এই আদেশ গুরুত্বপূর্ণ নতুন বাস্তবতা তৈরি করল বলে অভিমত জানাচ্ছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।
সিএ/এমআরএফ


