লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় ভারত থেকে দলবেঁধে ৪ থেকে ৫টি চিতাবাঘ প্রবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার নাজিরগোমানী ও গুরুপাড়া সীমান্ত দিয়ে বাঘগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয়দের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে সীমান্তের ৬৮ থেকে ৭০ নম্বর মেইন পিলারের কাছ দিয়ে ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়া টপকে বাঘগুলো বাংলাদেশের লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। সকালে সীমান্তবর্তী বেশ কিছু স্থানে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান গ্রামবাসী। অনেকে সেই ছাপের ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেছেন। ৫টি হিংস্র প্রাণীর উপস্থিতির খবরে সন্ধ্যা নামতেই গ্রামগুলোতে সুনসান নীরবতা নেমে আসছে। গবাদিপশু ও নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন কয়েক গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন সুমন জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাঘ প্রবেশের বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগেও জগতবেড় ইউনিয়নে দুটি চিতাবাঘ প্রবেশের ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় গ্রামবাসী পিটিয়ে একটি বাঘকে হত্যা করলেও চিতাবাঘের আক্রমণে আবু বক্করসহ অন্তত চারজন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। সেই ভয়াবহ স্মৃতির কারণে এবার এলাকাবাসী অনেক বেশি আতঙ্কিত ও সতর্ক রয়েছেন।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৬১ বিজিবির নাজিরগোমানী বিওপি ক্যাম্প থেকে এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ক্যাম্প কমান্ডার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, সীমান্ত এলাকায় চিতাবাঘ প্রবেশের বিষয়টি তারা নিশ্চিত হয়েছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করা এবং বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া রাতে ঘরের বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাঘের অবস্থান শনাক্তে বিজিবির নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঘগুলো লোকালয়ে দেখা গেলে আইন নিজের হাতে না নিয়ে দ্রুত বিজিবি বা বন বিভাগকে খবর দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
সিএ/টিআর


