ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রংপুর জেলা প্রশাসনের হলরুমে একটি কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতি এখন একটি নির্বাচনের আবহে প্রবেশ করেছে। আমরা চাই জনগণের সরাসরি ভোটে যারা ম্যান্ডেট পেয়ে ক্ষমতায় আসবেন, তাদের হাতেই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। এটিই আমাদের কমিটমেন্ট (প্রতিশ্রুতি)। আমরা দায়িত্ব শেষ করে পূর্বের ঠিকানায় ফিরে যাব—এভাবেই আমরা এগোচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে জন্য নির্বাচন কমিশন ও মাঠ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব কিংবা অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই সরকারের মূল লক্ষ্য।’
ময়মনসিংহে দীপু হত্যার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিংবা সহযোগিতা করেছে, তাদের সবাইকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এটি একটি মব জাস্টিস বা গণপিটুনির ঘটনা, যা কখনোই কাম্য নয়। ধর্ম অবমাননার অভিযোগ থাকলে দেশের প্রচলিত আইন রয়েছে। কেউ আইন নিজের হাতে নিতে পারে না। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে, তার বিচার আদালতেই হবে—পিটিয়ে হত্যা কিংবা পুড়িয়ে ফেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন আরও বলেন, ‘ধর্ম শান্তি, মানবতা ও সহনশীলতার শিক্ষা দেয়। ধর্মের নামে সহিংসতা চালানো ধর্মের মৌলিক শিক্ষার পরিপন্থী। তাই এ ধরনের জঘন্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।’
কর্মশালার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নৈতিক শিক্ষা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ গঠনে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলা অত্যন্ত প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার। এ ছাড়া ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীরা ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা, নৈতিক শিক্ষার প্রসার এবং সামাজিক সহিংসতা রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
সিএ/এএ


