জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে চার বছরের শিশু নুসরাত জাহান হাবিবার হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর নেপথ্য গল্প উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রকাশ পেয়েছে এক হৃদয়বিদারক সত্য—লোভ ও নৃশংসতায় আপন চাচাই হয়ে ওঠেন নিষ্পাপ শিশুটির ঘাতক।
গ্রেপ্তার ও স্বীকারোক্তি
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে হাবিবার আপন চাচা আমির হামজাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরদিন গ্রেপ্তার করা হয় নিহতের বাবার চাচাতো ভাই আল-আমিনকে (৩২)। দুজনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
অপহরণ থেকে হত্যাকাণ্ড—যেভাবে ঘটল
পিবিআই জামালপুরের পুলিশ সুপার পংকজ দত্ত জানান—
টাকার লোভে ভাতিজি হাবিবাকে অপহরণের পরিকল্পনা করে আমির হামজা ও আল-আমিন।
বাড়ির পাশের রাস্তা থেকে শিশুটিকে তুলে নিয়ে মুখ চেপে জঙ্গলে নিয়ে যায় তারা।
শ্বাসরোধে অচেতন হয়ে পড়ে হাবিবা।
সেই অবস্থায় আল-আমিন শিশুটির ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে কান্না ও চিৎকার শুরু করলে আবার মুখ চেপে ধরা হয়—এতেই মৃত্যু হয় চার বছরের শিশুটির।
অপরাধ ঢাকতেই আরও নৃশংসতা
শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর অপরাধীরা লাশ গোপন করতে আরও ভয়ংকর কাজ করে—
দেহে ব্যাটারির অ্যাসিড ঢেলে বিকৃত করার চেষ্টা,
জঙ্গলে পাতা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখা,
পরে রাতের অন্ধকারে নদীতে কচুরিপানার নিচে লাশ লুকিয়ে রাখা,
পরদিন আবার তুলে এনে বাড়ির পাশেই ফেলে দেওয়া—যেন মনে হয় এটি অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের কাজ।
ঘটনার শুরু ও তদন্ত
২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বাড়ির পাশ থেকে নিখোঁজ হয় নুসরাত জাহান হাবিবা।
১০ সেপ্টেম্বর তার বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
১১ সেপ্টেম্বর বাড়ির কাছ থেকেই উদ্ধার হয় শিশুটির মরদেহ।
পরিবারের ঘনিষ্ঠ জন জড়িত থাকায় তদন্ত জটিল হয়ে পড়ে বলে জানায় পিবিআই। তবে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর সত্য সামনে এসেছে।


