শীতকাল মানেই পাতাঝরা মৌসুম। এ সময় অনেক বাগান রঙিন ফুলে ভরে ওঠার কথা থাকলেও অনেকের অভিযোগ, গাছে কুঁড়ি এলেও ফুল ফুটছে না। বিশেষ করে যারা নতুন করে বাগান শুরু করেছেন, তারা রাসায়নিক সার ব্যবহারে দ্বিধায় থাকেন। কোন সার কতটা প্রয়োগ করবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে অনেক সময় গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। এর ফলেই ফুল ও ফল আসতে দেরি হয়।
এই পরিস্থিতিতে গাছের যত্নে কার্যকর বিকল্প হতে পারে জৈব সার। দৈনন্দিন রান্নাঘরের কিছু সাধারণ উপাদান নিয়মিত গাছের গোড়ায় ব্যবহার করলে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং ফুল ও ফল ধরার সম্ভাবনা বাড়ে। শীতকালে এসব প্রাকৃতিক উপাদান মাটির গুণাগুণ উন্নত করে গাছকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
ডিমের খোসা গাছের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈব উপাদান। এতে থাকা ক্যালসিয়াম গাছের গঠন মজবুত করে এবং ফুল ধরতে সাহায্য করে। টমেটো ও ক্যাপসিকামের মতো গাছের ক্ষেত্রেও এটি উপকারী। ডিমের খোসা ভালোভাবে শুকিয়ে গুঁড়ো করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
সবজির খোসাও গাছের জন্য বেশ কার্যকর। আলু, পেঁয়াজ, রসুন, গাজর, পটলসহ বিভিন্ন সবজির খোসায় ফসফরাস, পটাশিয়াম ও নানা ধরনের খনিজ উপাদান থাকে। এসব খোসা সরাসরি গাছের গোড়ায় দেওয়া যায় অথবা পচিয়ে জৈব সার তৈরি করেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব্যবহৃত চা পাতায় থাকে নাইট্রোজেন, যা মাটিকে উর্বর করে তোলে। চা পাতা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং গাছ সুস্থ থাকে। একইভাবে অল্প পরিমাণ কফি পাউডারও ব্যবহার করা যেতে পারে। কফি পাউডারে থাকা নাইট্রোজেন গাছের শিকড়ে পুষ্টি পৌঁছাতে সাহায্য করে।
কলার খোসা গাছের জন্য আরেকটি উপকারী উপাদান। এতে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে, যা শিকড়কে শক্ত করে এবং ফুল ও ফল ধরাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। কলার খোসা কুচি করে বা পচিয়ে গাছের গোড়ায় ব্যবহার করা যায়।
পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেক সময় গাছের ফুল ও ফল নষ্ট করে দেয়। এ ক্ষেত্রে লেবুর খোসা কার্যকর হতে পারে। কমলালেবু বা পাতিলেবুর খোসায় থাকা প্রাকৃতিক তেল গাছের গোড়াকে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে।
নিয়মিত এসব জৈব উপাদান ব্যবহার করলে রাসায়নিক সার ছাড়াই গাছ সুস্থ রাখা সম্ভব। শীতকালে সঠিক যত্ন নিলে বাগান ভরে উঠবে ফুল ও ফলে।
সিএ/এএ


