জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা চেয়েছি একটা ব্যালট–বিপ্লব। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, কতিপয় রাজনৈতিক দল তাদের মার্কা বিলুপ্ত করে দিয়ে অন্য একটা দলে একীভূত হচ্ছে। যাঁরা এক-দুটি সিটের জন্য দলকে বিক্রি করে দিচ্ছেন, তাঁরা নিজেদের দলের প্রতি অন্যায় করেছেন। এর থেকে দুঃখজনক আর কিছুই হতে পারে না। আমরা চেয়েছি জুলাই বিপ্লব, কিন্তু কতিপয় রাজনৈতিক দল বুলেট–বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে অন্যায়ের বিপক্ষে, ইনসাফের পক্ষে লড়ে যেতে হবে। হাদি ভাই আমাদের শিখিয়েছেন, আমরা জান দেব কিন্তু জুলাই দেব না।’
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির হত্যার প্রতিবাদে ফেনী শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত শোক ও সংহতি সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ব্যালটের মাধ্যমে পরিবর্তনই ছিল প্রত্যাশিত পথ, কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু রাজনৈতিক তৎপরতা সেই প্রত্যাশার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
নবগঠিত গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট ফেনী জেলা শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত শোক ও সংহতি সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়া, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার জোবায়ের আহমদ ভূঁইয়া এবং কুমিল্লা মহানগর আহ্বায়ক মিয়া তৌফিক।
ফেনী জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক মাস্টার আহসানুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপি ফেনী জেলা আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম সৈকত, এবি পার্টির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম বাদলসহ গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘ন্যায়, ইনসাফ ও গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করতে যত ভয়ভীতিই দেখানো হোক না কেন, সন্ত্রাসবাদ ও আধিপত্যবাদের কাছে বাংলাদেশ আগেও কখনো মাথা নত করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। যারা ১৫ বছর জুলুমতন্ত্র চালিয়েছে, তাদের পালাতে ১৫ মিনিটও লাগেনি। ভবিষ্যতে যারা জনগণকে জিম্মি করতে চাইবে, তারাও জনরোষে পালাতে বাধ্য হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচারের নির্বাচন, সংস্কারের নির্বাচন। যাঁরা সংস্কার চান, হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার চান, তাঁদের উচিত বৃহত্তর মোর্চা করে সংস্কার আর বিচারবিরোধীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেওয়া।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, আগামী নির্বাচনে সংস্কারের পক্ষে হ্যাঁ ভোট এবং নতুন বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দিতে হবে। তিনি বলেন, যারা টাকার বিনিময়ে বা দু-একটা সিটের বিনিময়ে নিজেদের বিকিয়ে দেয়, তারা কখনো রাষ্ট্রের পক্ষের শক্তি হতে পারে না। আধিপত্যবাদের বিপক্ষে সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই করে তরুণ প্রজন্ম ফ্যাসিস্ট হটিয়েছে এবং আগামীতেও নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সিএ/জেএইচ


