ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মাকে তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম তাকে ডেকে পাঠান এবং দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা করেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হন। এর আগে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে পররাষ্ট্র সচিবের দপ্তরে প্রবেশ করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, দিল্লি, কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে অবস্থিত বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশন এবং সেখানে কর্মরত কূটনীতিকদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানাতে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এসব মিশনের নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের নজরে আনা হয়েছে।
গত ১০ দিনের মধ্যে এটি দ্বিতীয়বারের মতো প্রণয় ভার্মাকে তলব করল ঢাকা। এর আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলে তাকে তলব করা হয়েছিল।
সেসময় বাংলাদেশ সরকার অভিযোগ করে যে, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা নিয়মিত উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তার অনুসারীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াতে আহ্বান জানাচ্ছেন এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চলছে। এসব কর্মকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য মারাত্মক হুমকি বলে উল্লেখ করা হয়।
তলবের সময় আদালতের দেওয়া দণ্ড কার্যকরের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়। একই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের পলাতক সদস্যদের বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতার বিষয়টিও ভারতীয় হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব ব্যক্তি বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিকল্পনা, সংগঠন ও বাস্তবায়নে সহায়তা করছে এবং আসন্ন নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধে ভারতের জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেছে ঢাকা।
এ ছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশি রাজনৈতিক নেতা শরিফ ওসমান হাদির ওপর সংঘটিত হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া রোধে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়। কেউ ইতোমধ্যে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে থাকলে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় ভারতের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ সরকার।
তলবকালে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা জানান, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক—এটাই ভারতের প্রত্যাশা। এ লক্ষ্যে তার দেশ সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সিএ/জেএইচ


