নাসার নতুন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ভবিষ্যৎ চাঁদ অভিযান কর্মসূচিতে কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যুক্ত হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন জ্যারেড আইজ্যাকম্যান। তিনি জানিয়েছেন, ইলন মাস্কের স্পেসএক্স ও জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন—এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যে সংস্থা আগে লুনার ল্যান্ডার প্রস্তুত করতে পারবে, নাসার চাঁদে অবতরণ মিশনের দায়িত্ব সেই প্রতিষ্ঠানকেই দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের অনুমোদন পাওয়ার এক দিন পর ব্লুমবার্গ টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইজ্যাকম্যান বলেন, নাসার সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাঁর ভাষায়, চাঁদে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে যে প্রতিষ্ঠান সময়মতো ল্যান্ডার প্রস্তুত করতে পারবে, তাকেই বেছে নেওয়া হবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আইজ্যাকম্যানের এই বক্তব্যের পর নাসার আর্টেমিস কর্মসূচি কার্যত স্পেসএক্স ও ব্লু অরিজিনের মধ্যে এক প্রতিযোগিতায় রূপ নিয়েছে। বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৭ সালে আর্টেমিস থ্রি মিশনে স্পেসএক্সের স্টারশিপ ল্যান্ডার ব্যবহারের কথা রয়েছে। তবে স্টারশিপের উন্নয়ন ও পরীক্ষা কার্যক্রমে বিলম্ব হওয়ায় বিকল্প হিসেবে ব্লু অরিজিনের তৈরি ব্লু মুন ল্যান্ডার নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
এর আগে নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি স্পেসএক্সের সঙ্গে করা চাঁদে অবতরণসংক্রান্ত চুক্তি পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, স্টারশিপ ল্যান্ডার তৈরির কাজ নির্ধারিত সময়ের তুলনায় পিছিয়ে আছে। এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান ইলন মাস্ক। তিনি দাবি করেন, প্রয়োজনে স্পেসএক্স এককভাবেই চাঁদে মানুষের অবতরণ মিশন পরিচালনা করতে সক্ষম।
নাসার চাঁদে অবতরণ কর্মসূচিতে বর্তমানে প্রধান দুই বেসরকারি অংশীদার স্পেসএক্স ও ব্লু অরিজিন। স্পেসএক্সের স্টারশিপ এইচএলএস আকারে বড়, পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং উল্লম্বভাবে অবতরণে সক্ষম মহাকাশযান। অন্যদিকে ব্লু অরিজিনের ব্লু মুন একটি মাল্টি-স্টেজ লুনার ল্যান্ডার, যা নিয়ন্ত্রিত ও নির্ভুল অবতরণের জন্য বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে। সময়মতো ল্যান্ডার প্রস্তুতের সক্ষমতাই এখন নির্ধারণ করবে, নাসার পরবর্তী চাঁদ অভিযানের দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত কার হাতে যাচ্ছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
সিএ/জেএইচ


