সিরাজগঞ্জ শহরে প্রতিদিনই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে যানজট। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে যানবাহন। অথচ একের পর এক বহুতল ভবন, ব্যাংক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও শপিং কমপ্লেক্স গড়ে উঠলেও কোথাও মানা হচ্ছে না বাধ্যতামূলক পার্কিং নীতিমালা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের এসএস রোড, হাসপাতাল রোড, বাজার স্টেশন এলাকা, কালীবাড়ি রোড ও থানার মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের দুই পাশেই সারি সারি গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে। ফলে সড়ক সংকুচিত হয়ে যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে পড়ছে।
স্থানীয়রা জানান, বেশিরভাগ ভবন নির্মাণের সময় পার্কিংয়ের জায়গা দেখানো হলেও বাস্তবে তা ব্যবহার করা হচ্ছে দোকান বা গুদাম হিসেবে। এর দায় এড়াতে পারেন না সংশ্লিষ্ট অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষও।
এদিকে শহরের প্রায় সব ফুটপাথ দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকানপাট। ফলে পথচারীরা বাধ্য হয়ে সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থী, নারী ও বয়স্করা।

অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জ শহরে এখনো কোনো নির্ধারিত সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড না থাকলেও অবাধে চলছে সিএনজি অটোরিকশা। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়া ও পার্কিং করার কারণে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করছে।
একজন ভুক্তভোগী নাগরিক বলেন, শহরে হাঁটার কোনো জায়গা নেই। ফুটপাথ দখল, রাস্তায় গাড়ি সব মিলিয়ে সিরাজগঞ্জ এখন চলাচলের অযোগ্য শহরে পরিণত হচ্ছে।
ট্রাফিক পুলিশের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের কাজ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। নিয়মিত ব্যবস্থা নিতে গেলে চাপ আসে নানা দিক থেকে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার এক কর্মকর্তা বলেন, পার্কিংবিহীন ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাথ দখল উচ্ছেদ করা হবে।”
সচেতন মহলের মতে, শুধু অভিযান নয়-দরকার পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা। ভবন নির্মাণে কঠোর নিয়ম প্রয়োগ, নির্দিষ্ট পার্কিং জোন নির্ধারণ এবং ফুটপাথ দখলমুক্ত না করা হলে সিরাজগঞ্জ শহরের যানজট সমস্যা আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।
নাগরিকদের প্রশ্ন-শহর কি এভাবেই যানজট আর অব্যবস্থাপনার কাছে হার মানবে, নাকি এখনই নেওয়া হবে কার্যকর পদক্ষেপ?
ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিএ/টিআর


