সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ঝলমলে সমাপনীতে সেরা চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান গোল্ডেন ইউসর জিতে নিল আকিও ফুজিমোতো পরিচালিত রোহিঙ্গা ভাষার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘লস্ট ল্যান্ড’। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঘোষিত ফলাফলে এই স্বীকৃতি চলচ্চিত্রটির বিশ্বব্যাপী আলোচনাকে আরও একধাপ এগিয়ে দিল।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিশেষ সম্মাননা জানানো হয় অ্যান্থনি হপকিন্স, ইদ্রিস এলবা, ড্যারেন অ্যারোনোফস্কি এবং সৌদি নির্মাতা আহদ কামেলকে। পুরো সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন হলিউড তারকা জনি ডেপ, শাইলিন উডলিসহ বিশ্বের আলোচিত শিল্পীরা। আন্তর্জাতিক তারকাদের উপস্থিতিতে উৎসবের আবহ হয়ে ওঠে আরও বর্ণাঢ্য।
রোহিঙ্গা ভাষার প্রথম চলচ্চিত্র ‘লস্ট ল্যান্ড’-এ দেখানো হয়েছে মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে দু’টি শিশুর জীবন-মরণ যাত্রা—মালয়েশিয়ায় থাকা কাকাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সেই সংগ্রামে উঠে এসেছে বাস্তুচ্যুতি, ভয়, মানবিকতা আর প্রত্যাশার মর্মস্পর্শী চিত্র। পুরস্কার প্রদানকালে জুরি প্রধান শন বেকার বলেন, ‘চলচ্চিত্রটি বাস্তুচ্যুত শিশুদের দুর্দশাকে অসাধারণ মানবিকতা ও কবিত্বপূর্ণ তাগিদে তুলে ধরে।’ তাঁর এই মন্তব্যেই ফুটে ওঠে সিনেমাটির শিল্পমান ও রাজনৈতিক তাৎপর্য।
গোল্ডেন ইউসরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ১ লাখ ডলার প্রাইজমানি। এর আগে চলচ্চিত্রটি এ বছরের ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের হরাইজনস বিভাগে বিশ্বপ্রিমিয়ারে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিল।
রেড সি ফেস্টিভ্যালের এবারের জুরি বোর্ডে ছিলেন শন বেকারের পাশাপাশি রিজ আহমেদ, নাওমি হ্যারিস, ওলগা কুরিলেনকো ও নাদিন লাবাকি। তাদের অভিমত—এই বছরের নির্বাচিত ছবিগুলো ‘জরুরি ও গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক’, যা আন্তর্জাতিক দর্শকদের সামনে নতুন চোখে মানবীয় গল্প তুলে ধরেছে।
‘সিনেমার প্রতি ভালোবাসা’—এই স্লোগান নিয়ে পঞ্চমবারের মতো চলতি বছরের মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) জেদ্দায় বসে রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশ থেকে ১১১টি চলচ্চিত্র অংশ নেয় এবারের আসরে, যা মধ্যপ্রাচ্যে চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সিএ/এএ


