রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা ভবিষ্যৎ চুক্তির ভিত্তি হতে পারে। তবে একই সঙ্গে তিনি কিয়েভকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন—দখল করা অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা না সরালে রুশ সেনারা জোর করেই আরও ভূখণ্ড দখল করবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুতিন জানান, আগামী সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মস্কো সফর করবে। তিনি বলেন, ক্রেমলিন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
এই প্রসঙ্গে সিএনএন জানিয়েছে, দ্রুত কোনো বড় ধরনের অগ্রগতির সম্ভাবনা কম। কারণ পুতিন আবারও তাঁর কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন—ইউক্রেনকে অবশ্যই দখলকৃত অঞ্চল থেকে সেনা সরাতে হবে।
পুতিন সতর্ক করে বলেন, যদি তারা না সরে, আমরা সামরিক উপায়ে তা নিশ্চিত করব। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর মধ্যে লুহানস্কের প্রায় পুরোটা এবং দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ার উল্লেখযোগ্য অংশ অন্তর্ভুক্ত। মস্কো দাবি করছে, এই চারটি অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে ইউক্রেনকে ছেড়ে দিতে হবে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া পূর্ব ফ্রন্টে কিছু অগ্রগতি করেছে, বিশেষ করে পোকরভস্ক শহর ঘিরে। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার মনে করছে, রাশিয়ার অগ্রগতির গতি দেখে দ্রুত পুরো দোনেৎস্ক দখল সম্ভব হবে না।
রাশিয়ার দাবি করা এলাকাগুলো ইউক্রেনের ফরট্রেস বেল্ট বা শক্তিশালী প্রতিরক্ষা লাইন—যা কিয়েভের নিরাপত্তার মূল ভিত্তি বলে বিবেচিত। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—কোনো অবস্থাতেই ভূখণ্ড ছাড় দেওয়া হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া পরিকল্পনা নিয়ে বলা হচ্ছে, এতে রাশিয়ার বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। প্রথম খসড়ায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ছোট করা এবং ন্যাটোতে যোগদান নিষিদ্ধ করার মতো শর্ত যুক্ত ছিল। পুতিন জানান, সংশোধিত খসড়া নিয়ে নতুন আলোচনা হতে পারে এবং এই পরিকল্পনা ভবিষ্যৎ সমঝোতার ভিত্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।
সিএ/এমআরএফ


