বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, সরকারের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্বৈত দায়িত্বে ‘স্বার্থের সংঘাত’ তৈরি হচ্ছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি নিরপেক্ষ আচরণের আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করছি সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যা জাতিতে বিভাজন বা অনৈক্য সৃষ্টি করবে। এখানে স্পষ্ট স্বার্থের সংঘাত রয়েছে। সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে সহযোগিতা করছি, ভোটে অংশ নিচ্ছি এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছি। কিন্তু একই সঙ্গে সরকারপ্রধান ও ঐকমত্য কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূস যে সুপারিশগুলো দিয়েছেন, তা জুলাই জাতীয় সনদের চেতনা থেকে অনেকটাই সরে গেছে।”
তিনি আরও জানান, গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ঐকমত্য কমিশনে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। সালাহউদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবে, সেটিই জাতীয় সনদ হবে এবং পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ তা বাস্তবায়ন করবে। এই অবস্থান থেকে প্রধান উপদেষ্টা সরে যেতে পারেন না।
সালাহউদ্দিন আরও বর্ণনা করেন, সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে তিন দফা আলোচনার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের আগে রাজনৈতিক দলগুলো একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সনদে স্বাক্ষর করতে চেয়েছিল। সনদ প্রণীত হয়েছিল যাতে প্রায় ৮৪টি দফা অন্তর্ভুক্ত থাকে। যদিও এসব দফার কিছু বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নোট অব ডিসেন্ট ছিল, তা প্রথাগত নয়। নোটগুলিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দল চাইলে নির্বাচনী ইশতেহারে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে এবং জনগণের ম্যান্ডেট পেলে তা বাস্তবায়ন করবে।
সালাহউদ্দিনের মতে, জুলাই জাতীয় সনদ মূলত দেশের সব রাজনৈতিক দলকে সমন্বিতভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয় এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসন থাকা জরুরি। তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, দ্বৈত দায়িত্বে থাকা একজন উপদেষ্টা কখনও কখনও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের আশঙ্কা তৈরি করতে পারেন, যা জাতীয় ঐকমত্য এবং নির্বাচনী স্বচ্ছতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সিএ/এমআরএফ


