মাত্র ছয় মাসে পবিত্র কোরআন শরিফ মুখস্থ করে হাফেজে কোরআনের মর্যাদা অর্জন করেছে বাগেরহাটের ১১ বছর বয়সী মাহমুদ হাসান। অল্প বয়সে এমন কৃতিত্ব অর্জন করায় মুগ্ধ তার শিক্ষক ও স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষ।
বাগেরহাট সদর উপজেলার পশ্চিম বাসাবাটি দরাটানার ৯নং ওয়ার্ডের দিনমজুর পরিবারে জন্ম মাহমুদের। তিনি পুরাতন কোর্ট চত্বরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মডেল হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তার বাবা মো. মামুন মোল্লা একজন দিনমজুর, মা মোসা. মারুফা আক্তার গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বাসাবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষে হাফেজ হওয়ার উদ্দেশ্যে ভর্তি হয় হাফিজিয়া মাদ্রাসায়।
ছোটবেলা থেকেই ইসলামের প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল মাহমুদের। বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় ও নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে প্রতিদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা কোরআন তিলাওয়াত ও মুখস্থ করায় মনোযোগী ছিল সে। মাত্র ছয় মাসের নিরলস পরিশ্রমে অর্জন করে হাফেজে কোরআনের মর্যাদা।
মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক, ইমাম ও খতিব মাওলানা রুহুল আমিন খান বলেন, “মাহমুদ অত্যন্ত মনোযোগী ও ভদ্র ছাত্র। ছয় মাসে ৩০ পারা মুখস্থ করা সাধারণ মানুষের পক্ষে অকল্পনীয়। আল্লাহর রহমত, মনোযোগ ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সে এই সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে মাহমুদ একজন আলোকিত আলেম ও ইসলামের দাঈ হিসেবে দেশ ও জাতির সেবা করবে।”
মাহমুদের বাবা মামুন মোল্লা বলেন, “আমি দিনমজুর মানুষ, প্রতিদিনের আয়ে সংসার চলে। কিন্তু সবসময় চেয়েছি, আমার সন্তান যেন আল্লাহর কালাম মুখস্থ করে মানুষ হয়। আজ মাহমুদ হাফেজ হয়েছে—এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আমার মৃত্যুর পর যেন আমার সন্তান আমার জানাজা পড়ায়, সেটাই আমার একমাত্র ইচ্ছা।”
মা মারুফা আক্তার বলেন, “ছোটবেলা থেকেই মাহমুদ নামাজ-রোজায় আগ্রহী ছিল। আমি সবসময় তার জন্য দোয়া করেছি যেন আল্লাহ তাকে কোরআনের আলোয় আলোকিত করেন। ছয় মাসে পুরো কোরআন মুখস্থ করা এক অলৌকিক ঘটনা, এটা আল্লাহর অসীম রহমত ছাড়া সম্ভব নয়।”
স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরাও মাহমুদের এই অর্জনে অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। তারা মনে করেন, এই ছোট্ট বয়সেই মাহমুদের এই অর্জন সমাজের অন্য শিশুদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
সিএ/এমআরএফ


