প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপের নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে অনুষ্ঠিত শুনানিতে বিচারপতিরা তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন। মামলাটি ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমা এবং বিশ্ব অর্থনীতির ওপর প্রভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
শুনানিতে হোয়াইট হাউসের আমদানি শুল্কের যুক্তি নিয়ে বিচারপতিদের সন্দেহ প্রকাশ দেখা গেছে। যদিও ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন পুনরুদ্ধার এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এই শুল্ক প্রয়োজন, একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অঙ্গরাজ্য প্রশাসনের পদক্ষেপকে অযৌক্তিক মনে করছে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে কার্যত করের সমান এই শুল্ক আরোপ করেছেন।
বিচারপতিরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন প্রতিটি দেশকে প্রতিরক্ষা ও শিল্পের হুমকি হিসেবে ধরা হয়েছে এবং পারস্পরিক শুল্ক আরোপের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না। আইন বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেছেন, ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (আইইইপিএ) অনুযায়ী জরুরি পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টকে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু শুল্ক আরোপের জন্য এর সীমা কি যথেষ্ট বৈধ তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
শুনানিতে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটর জেনারেল জন সাউয়ার, অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। তারা যুক্তি উপস্থাপন করেছেন, প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপ ‘নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার স্বাভাবিক সম্প্রসারণ’ হিসেবে দেখা উচিত।
বিচারপতিরা শুল্ক ও করের পার্থক্য এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার সীমা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস বলেন, “এই যুক্তি প্রেসিডেন্টকে যেকোনো দেশ থেকে যেকোনো পণ্যের ওপর অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য শুল্ক আরোপের সুযোগ দেয়।” অন্যদিকে বিচারপতি নিল গোরসাচ এবং সোনিয়া সোটোমেয়রও সীমা ও কর-শুল্ক পার্থক্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
মামলাটি প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলারের আমদানি শুল্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মোট শুল্ক আয়ের প্রায় অর্ধেক। ট্রাম্প প্রশাসন সতর্ক করেছে, যদি আদালত দ্রুত রায় না দেয়, তবে এই অঙ্ক এক ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
সিএ/এমআরএফ


