ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতকে জাতীয় অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত করতে ধারাবাহিকভাবে চারটি বৈঠক করেছে বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটি। এসব বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা।
সভাগুলোতে এসএমই উদ্যোক্তাদের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিশ্চিতের ওপর জোর দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ইতোমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বৈদেশিক অর্ডার থেকে প্রাপ্ত অর্থের ১০ শতাংশ বাধ্যতামূলক জমা রাখার নিয়ম বাতিলের উদ্যোগ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বছরে ন্যূনতম তিন হাজার মার্কিন ডলারের পৃথক বৈদেশিক মুদ্রা কোটা প্রস্তাবনা।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চারটি নতুন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়—এসএমই খাতের জন্য উদ্যোক্তাবান্ধব আর্থিক পণ্য তৈরি, নীতিমালার কার্যকারিতা মূল্যায়ন, বাণিজ্য লাইসেন্সবিহীন ঋণের সম্ভাব্যতা যাচাই, এবং পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচিতে সুদের হার পুনর্বিবেচনা।
আগের বৈঠকগুলোতে উদ্যোক্তাদের সমস্যা ও প্রস্তাব শোনা হয় এবং সেই ভিত্তিতে বাস্তবায়নাধীন বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নমুনা ছাড়প্রক্রিয়া সহজীকরণ, ডিজিটাল মানিব্যাগের সুবিধা, অনলাইন বিক্রির অর্থ দ্রুত জমা, রপ্তানিতে বি-টু-বি ও বি-টু-সি মডেল অন্তর্ভুক্তি, সচেতনতামূলক কর্মসূচি, বৈদেশিক মুদ্রা কার্ড চালুর প্রস্তাব এবং বিদেশে দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে এসওপি বাস্তবায়ন।
এছাড়া কৃষি-জৈব পণ্যের সনদ ইস্যুতে নতুন উদ্যোগ, ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়া আগাম অর্থপ্রদানের সীমা বাড়ানো, বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ হিসাবের সীমা বৃদ্ধি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবসা সহজীকরণ প্রবাহচিত্র প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, “সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনা। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের গতিশীলতা বাড়ানো ও তাদের জন্য ব্যবসার প্রতিটি ধাপ সহজ করা এখন সময়ের দাবি। সরকারকে সহায়ক ভূমিকা নিতে হবে, বাধা নয়।”
সূত্র: বাসস
সিএ/এমআরএফ


