ইগো আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে প্রভাব বিস্তার করে। এটি যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা না যায়, তাহলে সম্পর্কের সমস্যা, মানসিক চাপ ও অপ্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতার জন্ম দেয়। ইগো নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা মনকে শান্ত রাখতে পারি, সম্পর্ক উন্নত করতে পারি এবং নিজের জীবনে গভীর সমৃদ্ধি আনতে পারি। জেনে নিন, ইগো নিয়ন্ত্রণের ৫টি কার্যকর উপায় বিস্তারিতভাবে—
১. কোন বিষয়গুলো ইগো বাড়িয়ে দেয়, সেদিকে খেয়াল করুন
ইগো সাধারণত তুলনা, প্রতিরক্ষামূলক মনোভাব বা নিজেকে সঠিক প্রমাণ করার চেষ্টার মাধ্যমে বেড়ে ওঠে। নিজের মনোভাব পর্যবেক্ষণ করুন—আপনি কখন বিরক্ত হন, কখন অতিরিক্ত গর্ব অনুভব করেন। নিজের সীমাবদ্ধতা ও ভুল বোঝার বিষয়গুলো চিহ্নিত করুন। এই সচেতনতা আপনাকে ইগো নিয়ন্ত্রণের প্রথম ধাপ শেখাবে।
২. শেখার মানসিকতা বজায় রাখুন
যখন আমরা মনে করি, শেখার আর কিছুই অবশিষ্ট নেই, তখন ইগো তৈরি হয়। নিজেকে সবসময় শিক্ষানবিস মনে করুন। নতুন বিষয়ে কৌতূহলী হোন, অন্যদের অভিজ্ঞতা ও মতামত শোনার মানসিকতা রাখুন। ভুল স্বীকার করার সাহস রাখুন। শেখার এই মনোভাব ইগোকে হ্রাস করে এবং আপনার ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে সমৃদ্ধি আনে।
৩. অন্যদের সেবা করুন
নিজের স্বার্থের বাইরে অন্যদের কল্যাণে মনোনিবেশ করুন। পরিবারের সদস্য, বন্ধু, পরিচিতজন বা অচেনাদের জন্য ইতিবাচক কিছু করুন। এমনকি মুখের ভাষা বা ছোট্ট কথাও অন্যের জীবনে বড় প্রভাব রাখতে পারে। সেবা ও সহমর্মিতার মাধ্যমে নিজের অহংকার হ্রাস পায় এবং মন শান্ত হয়।
৪. মননশীলতা বজায় রাখুন
মননশীলতা বা mindfulness চর্চা করলে চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ‘আমি তার চেয়ে ভালো’, ‘আমি তার চেয়ে কম’ বা ‘আমার দিকে তাকাও’ এই ধরনের তুলনামূলক চিন্তাভাবনা কমে যায়। মননশীলতার মাধ্যমে আপনি ধীরে, সংযত ও বিনয়ীভাবে আচরণ করতে পারবেন। এটি ইগো কমাতে ও সম্পর্কের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।
৫. নিজের উদ্দেশ্য ও প্রতিফলন করুন
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন—আপনি কেন কাজ করছেন? স্বীকৃতি বা প্রশংসা খুঁজছেন নাকি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছেন? যখন নিজের কাজ ও লক্ষ্যতে মনোনিবেশ থাকবে, তখন অন্যের মন্তব্য বা সমালোচনায় প্রভাব পড়বে না। নিজের উদ্দেশ্যের প্রতি মনোযোগ দিলে ইগো ঝেড়ে ফেলা সহজ হয় এবং মানসিক প্রশান্তি আসে।
সংক্ষেপে, ইগো নিয়ন্ত্রণ মানে নিজের মনকে সচেতন, নম্র ও সৎ রাখার চর্চা। এটি শুধু মানসিক শান্তি আনে না, সম্পর্কের উন্নতি ও ব্যক্তিগত সমৃদ্ধিও নিশ্চিত করে। নিয়মিত এই পাঁচটি উপায় প্রয়োগ করলে ইগোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং জীবনে স্থিরতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
সিএ/এমআর


