জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বর্তমানে সম্পূর্ণ অকার্যকর অবস্থায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে বড় বড় যুদ্ধ শুরু করছে সেই দেশগুলোই, যারা নিজেরাই নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। অথচ তারা গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় আছে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রেসিডেন্ট লুলা। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানায়।
লুলা বলেন, “আজ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কোনো ভূমিকা রাখছে না। সাম্প্রতিক সময়ের প্রায় সব বড় যুদ্ধের পেছনে রয়েছে এই পরিষদেরই সদস্য দেশগুলো। তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে, কোনো জবাবদিহিতা ছাড়াই এসব যুদ্ধ পরিচালনা করছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আজকের জাতিসংঘ কার্যত থেমে গেছে, ফলে বিশ্বে কোনো কার্যকর বৈশ্বিক নেতৃত্ব অবশিষ্ট নেই।”
গাজায় চলমান মানবিক সংকট প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ফিলিস্তিনে দীর্ঘদিন ধরে যখন গণহত্যা চলছে, তখন নিরাপত্তা পরিষদের এই দেশগুলো কীভাবে চুপ করে থাকতে পারে?”
তিন দিনের সরকারি সফরে বর্তমানে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন প্রেসিডেন্ট লুলা। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর এটি তার প্রথম মালয়েশিয়া সফর। আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এসময় লুলা বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর প্রতি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে, যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠী।
অন্যদিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, প্রেসিডেন্ট লুলা এমন একজন নেতা, যিনি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিকতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। তিনি গাজার মানুষের প্রতি লুলার সহমর্মিতা এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
বৈঠক শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ আনোয়ার ইব্রাহিম লেখেন, “আমরা বাণিজ্য, জ্বালানি, কৃষি প্রযুক্তি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে একমত হয়েছি।”
সিএ/এমআর


