ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত যুদ্ধবিরতি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে। এর ফলে বহু ফিলিস্তিনি পরিবার ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া বাড়ির দিকে ফিরে যাচ্ছেন।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টা) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার জনবহুল এলাকা থেকে সরে যায়। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে তাদের ট্যাংক ও সামরিক যানগুলো গাজার বাইরে চলে যেতে দেখা যায়। আইডিএফ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট এলাকায় তারা অবস্থান করছে এবং যেকোনো তাৎক্ষণিক হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত।
উপকূলবর্তী সড়ক দিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজার দিকে দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক যাত্রা শুরু করেছেন। অনেকে গাড়ি বা ঘোড়াগাড়িতে যাচ্ছেন, তবে অনেকেই পায়ে হেঁটেই বাড়ির দিকে যাচ্ছে। হামাসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা গাজার বাসিন্দাদের সীমান্তের কাছে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, যা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর শিথিল করা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, উপত্যকার ৫৩ শতাংশ অংশ এখনো ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে গাজা ও ইসরায়েল সীমান্তে বাফার জোন তৈরি হয়েছে, যা ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং সেখানকার সমস্ত বাড়িঘর তছনছ হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি সেনারা গাজা-মিসর সীমান্তের ফিলাডেলফি করিডর, উত্তরাঞ্চলের বেঈত হানুন ও বেঈত লাহিয়া, রাফা ও দক্ষিণাঞ্চলের খান ইইনিসের বেশিরভাগ অংশে অবস্থান করছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাসকে ইসরায়েলি সকল জীবিত জিম্মি (২০ জন) ও মৃত জিম্মির মরদেহ (২৮ জন) হস্তান্তর করতে হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলও তাদের কারাগার থেকে প্রায় ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবেন। এছাড়া আরও ১,৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দিও ধীরে ধীরে ছাড়া হবে। তবে সবচেয়ে পরিচিত বন্দি মারওয়ান বারঘুতি মুক্তি পাচ্ছেন না।
এছাড়া, যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়েছে। Trump-এর পরিকল্পনায় প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ পাঠানোর কথা থাকলেও প্রথম পর্যায়ে দৈনিক অন্তত ৪০০ ট্রাক প্রবেশ করবে।
ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো দীর্ঘদিন পর তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িতে ফিরে গিয়ে ক্ষতবিক্ষত জীবন পুনর্গঠনের চেষ্টা শুরু করেছেন।
সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল
সিএ/এমআর