রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ধৈর্য দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে ব্যাংকিং, তেল এবং শুল্ক খাতে নতুন করে কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
শুক্রবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “ব্যাংক, তেল ও শুল্ক—সব দিক থেকেই খুব কঠোর নিষেধাজ্ঞা আসছে।” যদিও তিনি দাবি করেন, রাশিয়াকে শাস্তি দিতে ইতোমধ্যেই অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর উদাহরণ হিসেবে তিনি ভারতের ওপর আরোপিত বাড়তি শুল্কের কথা উল্লেখ করেন, যা রাশিয়ার জ্বালানি আমদানির কারণে বাড়ানো হয়েছিল। ট্রাম্প বলেন, “এটা মূলত ইউরোপের সমস্যা, যুক্তরাষ্ট্রের নয়।”
অন্যদিকে একইদিন ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় আপাতত ‘বিরতি’ চলছে। গত মাসে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তবে তাতে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, “যোগাযোগ চ্যানেল খোলা আছে, আলোচকরা চাইলে তা ব্যবহার করতে পারেন। তবে আপাতত আমরা একে বিরতি বলতে পারি।”
এদিকে শুক্রবার জি-৭ অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের আহ্বান জানাবে—রাশিয়ার তেল কেনার কারণে চীন ও ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করতে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব করছে, জি-৭ দেশগুলো যেন ইউরোপে আটকে থাকা রাশিয়ার প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের সার্বভৌম সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আইনগত পথ তৈরি করে এবং সেই সম্পদের মূলধন বা সুদ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করে।
এর আগে এই সপ্তাহেই ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের সতর্ক করেছেন, প্রয়োজনে ভারত ও চীনের ওপর নতুন করে কঠোর শুল্ক আরোপ করবেন তিনি—তবে শর্ত হলো, ইউরোপকেও একই পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্লুমবার্গ জানায়, ওয়াশিংটনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠকে ফোনে যোগ দিয়ে ট্রাম্প এই প্রস্তাব দিয়েছেন।
মার্কিন প্রশাসনের কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা চাপ আরও বাড়িয়ে দেবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার নতুন পর্ব শুরু করারও ইঙ্গিত হতে পারে।