রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইউক্রেন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে খসড়া প্রস্তাব নিয়ে এখনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সত্যিই অনেকদূর এগিয়েছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে এগিয়ে যেতে পারব বলে আমি আশাবাদী।” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাবের প্রক্রিয়াকে ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যদিও বিস্তারিত কিছু জানাননি।
রুবিও জানান, ন্যাটোর ভূমিকা এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার মতো কিছু বিষয় এখনও আলোচনা অবশিষ্ট রয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৮ দফার প্রস্তাবনার জটিল ইস্যুগুলোতে তারা অনেকটা সমাধান করতে সক্ষম হয়েছেন। “আজ আমরা সে দিক থেকে খুব বড় অগ্রগতি করেছি,” বলেন রুবিও।
ইউক্রেন প্রতিনিধি দলের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাকও একই সুরে বলেন, আলোচনায় “খুব ভালো অগ্রগতি” হয়েছে এবং তারা “ইউক্রেনের প্রাপ্য ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির দিকে এগোচ্ছে”।
এর আগে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার প্রতি যথাযথ কৃতজ্ঞতা দেখাচ্ছে না। এরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনকে ধন্যবাদ জানাতে শুরু করেন। রোববার সকালে ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, “ইউক্রেনের ‘নেতৃত্ব’ আমাদের প্রচেষ্টার জন্য কোনো কৃতজ্ঞতা দেখায়নি, আর ইউরোপ এখনো রাশিয়া থেকে তেল কিনছে।”
এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে পোস্ট করে বলেন, তার দেশ “যুক্তরাষ্ট্রকে… এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে” ধন্যবাদ জানাচ্ছে, কারণ এই সহায়তা “ইউক্রেনের প্রাণ বাঁচাচ্ছে”। এছাড়া জেলেনস্কি খুব শিগগিরই ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারেন।
রুবিও বলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে সমঝোতা সম্ভব কি না—এ প্রশ্নে, “আমাদের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব এটি শেষ করা।” তিনি প্রস্তাবিত মার্কিন পরিকল্পনাকে “পরিবর্তনশীল নথি” হিসেবে বর্ণনা করেন, যা চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি হওয়ার আগে সংশোধিত হতে থাকবে। চূড়ান্ত পরিকল্পনা মস্কোর কাছেও উপস্থাপন করতে হবে। রুবিও বলেন, “স্পষ্টতই, এখানে রাশিয়ারও মতামত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগেই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত শান্তি চুক্তির “ভিত্তি” হতে পারে। তবে ইউক্রেন আলোচনা থেকে সরে এলে আরও ভূখণ্ড দখলের হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
সিএ/এমআরএফ


