ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা ও গুলিবর্ষণে কয়েকজন নিহত হয়েছেন, যা হামাসের সঙ্গে বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) আল জাজিরার বরাতে জানা গেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গাজার আল-শাআফ এলাকায় পৃথক দুই হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স। তারা হামলার সময় ধ্বংসস্তূপে নিজেদের বাড়িঘর খুঁজতে গিয়েছিলেন। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে, নিহতরা ‘হলুদ সীমারেখা’ অতিক্রম করে শুজাইয়ার দিকে আসছিলেন, যা তাদের জন্য হুমকি তৈরি করেছিল।
এই হলুদ সীমারেখা গত ৪ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মানচিত্রে নির্ধারিত হয়, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী অবস্থান করছে। তবে গাজাবাসীরা বলছেন, সীমারেখাটি স্পষ্ট নয়। স্থানীয় বাসিন্দা সামির বলেন, “মানচিত্র দেখেছি, কিন্তু সীমারেখা কোথায় বুঝতে পারছি না।”
যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। গত রোববার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪২ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস রাফাহ এলাকায় তাদের সেনা হত্যা করেছিল এবং তা প্রতিশোধ নিতে হামলা চালানো হয়েছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, রাফাহর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রিত অংশে তাদের কোনো ইউনিট সক্রিয় নেই।
হামাস জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং মৃতদের মরদেহ হস্তান্তরের চেষ্টা করছে, যদিও গাজার ধ্বংসস্তূপের কারণে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েল রোববার গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানো বন্ধের হুমকি দিলেও পরে জানায়, তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখবে। জাতিসংঘের মুখপাত্র জানান, সহায়তা পাঠানো শুরু হয়েছে, তবে কী পরিমাণ তা স্পষ্ট নয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদক জানান, সহায়তা বহনকারী ট্রাকগুলো এখনো বিভিন্ন চেকপয়েন্টে আটকে আছে। সোমবার খান ইউনিসে ফের বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, এই ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষা করা জরুরি এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তদন্ত হওয়া উচিত।
সিএ/এমআর