জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বাংলাদেশে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়কে ‘জবাবদিহির পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুটি মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠন করেছে। অভিযোগগুলো টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেল ও জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল থেকে উঠে এসেছে। মামলায় সাবেক ও বর্তমান কিছু সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের সাবেক মহাপরিচালক এবং র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা অন্তর্ভুক্ত।
শনিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানায়, তারা এক ডজনের বেশি অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাকে আটক করেছে। জাতিসংঘ প্রধান বলেন, “এই কর্মকর্তাদের স্বাধীন ও যোগ্য বেসামরিক আদালতে দ্রুত হাজির করা জরুরি, যাতে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বিচার স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়।”
ভলকার তুর্ক আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে সুষ্ঠু বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে সংবেদনশীল এই মামলাগুলোতে ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা রক্ষা অপরিহার্য।
২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশ গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধন আনে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো গুমকে আইনত স্বীকৃত অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
তুর্ক আরও বলেন, “আগের সরকারের আমল থেকে ঝুলে থাকা বহু মামলার দ্রুত ও সুষ্ঠু নিষ্পত্তি জরুরি। অন্যায়ভাবে আটক রাখা ব্যক্তিদের, বিশেষ করে গুম থেকে ফিরে আসা, সাংবাদিক ও সাবেক সরকারের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া, কোনো মামলাতেই মৃত্যুদণ্ডের পথ বেছে নেওয়া যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু বিচারের মাধ্যমে নয়, সত্য উদঘাটন, ক্ষতিপূরণ, নিরাময় ও ন্যায়বিচারভিত্তিক প্রক্রিয়া শুরু করাই বাংলাদেশের জন্য অগ্রগতি। এতে অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।”
সিএ/এমআর