কিয়েভ মঙ্গলবার জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি বাসভবনে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ কোনো প্রমাণ নেই। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, মস্কো যুদ্ধ শেষ করার আলোচনায় প্রভাব ফেলার জন্য ভুয়া দাবি ছড়াচ্ছে।
এর আগের দিন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, রাশিয়া কিয়েভে হামলার ভূমি প্রস্তুত করছে এবং রাজধানীর বাসিন্দাদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
মস্কো সোমবার দাবি করেছিল, নভগোরোদ অঞ্চলে, মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মাঝামাঝি পুতিনের একটি নিরিবিলি বাড়িতে ইউক্রেন ড্রোন পাঠিয়েছে। তবে ক্রেমলিন মঙ্গলবার এটিকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ এবং ‘পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত হামলা’ আখ্যা দিলেও প্রমাণ দিতে পারেনি। তারা জানিয়েছে, ‘সব ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে’।
রাশিয়ার পক্ষ আরও জানায়, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘কীভাবে, কখন এবং কোথায়’ পাল্টা হামলা চালানো হবে, তা রুশ সেনাবাহিনী নির্ধারণ করেছে। রাশিয়া প্রায় চার বছর ধরে প্রতিদিন ইউক্রেনে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে, যার ফলে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ এই সংঘাত শেষ করার আলোচনায় তারা নিজেদের অবস্থান ‘আরো কঠোর’ করবে।
কিয়েভ জোর দিয়ে বলেছে, মস্কো দাবি তুললেও ২৪ ঘণ্টা পার হওয়া সত্ত্বেও কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতে পারেনি। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘প্রায় একদিন কেটে গেছে, তবু রাশিয়া এখনো কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেয়নি। এবং দেবে না। কারণ কোনো প্রমাণ নেই। এমন কোনো হামলা হয়নি।’
মস্কোর অভিযোগের পর ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমরা শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছি। এখন রাশিয়াসহ সবার কাছ থেকেই স্বচ্ছতা ও সততা প্রয়োজন।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প—যিনি সোমবার পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন—ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী রুশ অপপ্রচার হলেও কিয়েভের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন, কে আমাকে এ কথা বলেছে? প্রেসিডেন্ট পুতিন—ভোরে—তিনি বললেন, তার ওপর হামলা হয়েছে। এটা ভালো বিষয় নয়।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আক্রমণাত্মক হওয়া এক বিষয়—কারণ তারা আক্রমণাত্মক। কিন্তু তার বাড়িতে হামলা করা আরেক বিষয়।’
তবে হামলার সময় পুতিন কোথায় ছিলেন তা রাশিয়া জানায়নি। রাশিয়ার এই দীর্ঘদিনের নেতার বাসভবনগুলো যেমন গোপনীয়তায় ঢাকা, তেমনি তার ব্যক্তিগত জীবনের বড় অংশও গোপনীয়।
সিএ/এএ


