সীমান্তে টানা কয়েক সপ্তাহের সংঘর্ষের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে দেশ দুটি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “উভয় পক্ষ এই যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরের পর অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, যা আজ ২৭ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে কার্যকর হবে। এই চুক্তির আওতায় সব ধরনের অস্ত্রবিরতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কোনো পক্ষই একে অপরের সামরিক লক্ষ্যবস্তু, বেসামরিক নাগরিক, এবং সাধারণ জনগণের সম্পদ বা অবকাঠামোর ওপর কোনো ধরনের আক্রমণ করতে পারবে না। এই সিদ্ধান্ত সব ক্ষেত্র এবং সব এলাকার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে।”
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এমারেল্ড ট্রায়াঙ্গল বা পান্না ত্রিভুজ নামের একটি ভূখণ্ড নিয়ে ১১৮ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসের সীমানা মিলিত হয়েছে পান্না ত্রিভুজে। প্রাচীন মন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনাসমৃদ্ধ এই অঞ্চলে উভয় দেশ নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে আসছে।
সংকটের সূত্রপাত হয়েছিল গত শতকের প্রথম দশকে। সে সময় ফ্রান্সের ঔপনিবেশ ছিল কম্বোডিয়ায়। ১৯০৭ সালে কম্বোডিয়ার একটি মানচিত্র প্রকাশ করে ফ্রান্স, যেখানে পান্না ত্রিভুজকে কম্বোডীয় ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়। এ নিয়ে তখনই থাইল্যান্ড প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
১৯৫৩ সালের ৯ নভেম্বর কম্বোডিয়া ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীন হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পরও পান্না ত্রিভুজের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখে কম্বোডিয়ার সরকার। ফলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক দীর্ঘদিন স্বাভাবিক হয়নি।
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সীমান্ত সংঘাতের পর ১৫ বছর আগে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে যায়। তবে গত বছরের মে মাস থেকে উত্তেজনা শুরু হয়। গত জুলাই মাসের শেষ দিকে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশের সেনাবাহিনী। ওই পাঁচদিনের সংঘাতে নিহত হন ৪৮ জন নাগরিক এবং প্রায় ৩ লাখ মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে হয়। পরে যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই দেশ পুনরায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
সূত্র: এএফপি
সিএ/এএ


