ভেনিজুয়েলার তেল পরিবহনকারী একটি ট্যাংকার আটক করার মাত্র এক দিন পর আবারও কঠোর পদক্ষেপ নিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার দেশটির আরও ছয়টি তেলবাহী জাহাজের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, স্বজন ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—‘অবৈধ শাসনব্যবস্থা’ টিকিয়ে রাখতে জড়িত থাকা।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সাংবাদিকদের জানান, আটক হওয়া জাহাজটির নাম ‘স্কিপার’। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, জাহাজটি অবৈধ তেল পরিবহন-এর সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং সেটিকে মার্কিন বন্দরে নেওয়া হচ্ছে। তবে কারাকাস এই আটক অভিযানকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ বলে নিন্দা করেছে।
এদিকে ভেনিজুয়েলা থেকে মাদক বহনকারী নৌযানে মার্কিন হামলায় কয়েক ডজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি মার্কিন যুদ্ধজাহাজও ওই অঞ্চলে প্রবেশ করেছে, যা মাদুরো সরকারের ওপর ওয়াশিংটনের চাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ট্রাম্প প্রশাসন আগেই অভিযোগ করেছে—ভেনিজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক হারে মাদক পাচারে জড়িত। অপরদিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ তেল মজুদ থাকা দেশ ভেনিজুয়েলা অভিযোগ করেছে, ওয়াশিংটন তাদের জাতীয় সম্পদ ‘চুরি করার চেষ্টা’ করছে। বুধবার এক বক্তব্যে মাদুরো বলেন, ভেনিজুয়েলা কখনোই ‘তেল উপনিবেশ’ হবে না।
হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব জানান, যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ মাদক প্রবাহ বন্ধ করা এবং নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আরও জাহাজ জব্দের পরিকল্পনা রয়েছে কি না—এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেননি। তবে লিভিট স্পষ্ট করে বলেন, কালোবাজারি তেল বহন করা অনুমোদিত জাহাজগুলোকে সমুদ্রে চলতে দেওয়া হবে না, কারণ এতে ‘বিশ্বজুড়ে অবৈধ শাসক ও দুর্বৃত্তদের’ মাদক–সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ জোগাবে।
তিনি আরও জানান, প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে ‘স্কিপার’ জাহাজ থেকে তেল জব্দ করার পরিকল্পনা রয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মাদুরোকে ফোন করে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন—এ তথ্যকে ট্রাম্প প্রশাসন মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পরে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, মাদুরোর স্ত্রীর তিন ভাগ্নে, সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে মাদুরোর ‘স্বৈরাচারী ও নিষ্ঠুর শাসন’ মোকাবিলা সহজ হবে। এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি আরও জানান, ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরো সরকার ও তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের ‘অপরাধের’ জন্য জবাবদিহির আওতায় আনছে।
সিএ/এএ


