যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন নতুন নির্দেশনা জারি করেছে, যার ফলে ফ্যাক্ট-চেকার, কনটেন্ট মডারেটর, কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা এবং অনলাইন নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত বিদেশিদের জন্য ভিসা দেওয়া সীমিত করা হবে। মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলার কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা সুরক্ষিত মতপ্রকাশের সেন্সরশিপে জড়িত বা যারা এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হবে। এই নীতি সাংবাদিক, পর্যটক এবং বিশেষভাবে এইচ-১বি ভিসার আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতের কর্মীদের উপর এর প্রভাব বেশি পড়তে পারে। এইচ-১বি ভিসা সাধারণত প্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট খাতে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য, যেখানে ভারতের মতো দেশগুলোর আবেদনকারীরাই মূলত বড় অংশ নেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ভিসার আবেদনকারীর পেশাগত ইতিহাস, লিংকডইন প্রোফাইল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হবে। ফ্যাক্ট-চেকিং, কনটেন্ট মডারেশন, ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটি বা কমপ্লায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আবেদন অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
নতুন নীতির ফলে অনলাইন নিরাপত্তায় কাজ করা পেশাজীবীরা, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কনটেন্ট প্রতিরোধ, ক্ষতিকর কনটেন্ট মনিটরিং বা ইহুদিবিরোধী বক্তব্য নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। যুক্তরাজ্যের অনলাইন সেফটি অ্যাক্ট বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তারাও এ নীতির কারণে ভিসা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
মার্কিন প্রশাসন এই ভিসা বিধিনিষেধকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার অংশ হিসেবে দেখাচ্ছে। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্পের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে এই নীতি তৈরি হয়েছে।
পার্টনারহিরো ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালিস গগুয়েন হান্সবার্গার বলেন, “ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটি কাজকে সেন্সরশিপের সঙ্গে মিশিয়ে দেখানো বিভ্রান্তিকর। এটি শিশু সুরক্ষা, প্রতারণা ও শোষণ প্রতিরোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত, যা আমেরিকানদের নিরাপত্তা বাড়ায়।”
গত বছর মার্কিন প্রশাসন বিদেশি সাংবাদিকদের ভিসা সীমিত করেছে, সরকারি ওয়েবসাইট থেকে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে এবং কিছু সাংবাদিককে হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে নিষিদ্ধ করেছে। মার্কো রুবিও বলেন, “যারা আমেরিকানদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে কাজ করেন, তারা আমাদের দেশে ভ্রমণের যোগ্য নন।”
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স
সিএ/ইরি


