ঢাকা: বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, আটলান্টিক মহাসাগরের ওপরের অংশে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এই চৌম্বক ক্ষেত্র আমাদের গ্রহকে মহাজাগতিক ক্ষতিকর বিকিরণ থেকে রক্ষা করে।
‘সাউথ আটলান্টিক অ্যানোমালি’ নামে পরিচিত এই দুর্বল অংশটি ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ‘সোয়ার্ম’ স্যাটেলাইট মিশনের ১১ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ থেকে জানা গেছে, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ আটলান্টিকের ওপর বিস্তৃত এই অঞ্চলটি এখন ইউরোপ মহাদেশের অর্ধেক আকারের সমান এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র মূলত ৩ হাজার কিলোমিটার গভীরে গলিত লোহার ঘূর্ণনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া বিদ্যুৎ প্রবাহ থেকে উদ্ভূত হয়। গবেষকরা জানান, পৃথিবীর ভেতরের এই ব্যবস্থা সব সময় পরিবর্তনশীল, ফলে কোথাও চৌম্বক ক্ষেত্র শক্তিশালী হচ্ছে, কোথাও দুর্বল হয়ে পড়ছে।
সোয়ার্ম মিশন ২০১৩ সালে উৎক্ষেপিত হয় এবং তিনটি স্যাটেলাইট নিয়ে গঠিত। স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর কেন্দ্র, ভূত্বক, মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডল থেকে চৌম্বক সংকেত সংগ্রহ করে দীর্ঘমেয়াদি বিশদ তথ্য দিয়েছে।
চৌম্বক ক্ষেত্রের দুর্বলতা স্যাটেলাইট কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে। ‘টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ ডেনমার্ক’-এর অধ্যাপক ক্রিস ফিনলে জানিয়েছেন, আফ্রিকার দিকে চৌম্বক ক্ষেত্র দ্রুত দুর্বল হচ্ছে, দক্ষিণ আমেরিকায় ধীরে। উত্তরের দিকে সাইবেরিয়ার ওপর চৌম্বক ক্ষেত্র শক্তিশালী হলেও কানাডার ওপর দুর্বল হয়ে যাওয়ায় চৌম্বক উত্তর মেরু রাশিয়ার দিকে সরে যাচ্ছে।
তবে বিজ্ঞানীরা আশ্বাস দিয়েছেন, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র ভেঙে পড়ার কোনো ঝুঁকি এখনও দূরে। সোয়ার্ম মিশনের ম্যানেজার আনজা স্ট্রম বলেন, “আমাদের পৃথিবীর গতিশীল হৃদয়ের বড় ছবি দেখাচ্ছে সোয়ার্ম।”
সিএ/এমআর