জাকিয়া সুলতানা প্রীতি
চিঠি দুইটি অক্ষর দ্বারা গঠিত একটি শব্দ হলেও এই চিঠির মধ্যে যেমন থাকে অতি আনন্দের সংবাদ আবার থাকে হৃদয়-বিদারক কোনো ঘটনার বর্ণনা।একটা সময় চিঠি ছিল একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম।এমন সময় ছিলো যখন ডাকপিয়নের টুংটাং শব্দ শোনার জন্য মানুষ অধীর হয়ে থাকতো,কারণ এই টুংটাং মানেই ছিল সেই কাঙ্খিত বস্তু চিঠির দেখা পাওয়া যা বয়ে নিয়ে আসতো পরিবারের কোনো সদস্য,কোনো বন্ধু বা কোনো প্রিয় মানুষের বার্তা।
যখন তথ্যপ্রযুক্তির এতো প্রসারতা ছিলো না তখন অনুভূতিগুলো লিখে পাঠানো হতো এই চিঠিতেই। হাসি-আনন্দের পাশাপাশি থাকতো দুঃখের কথা আবার হয়তো অভিমান আর অভিযোগে ভরে যেত প্রতিটি পৃষ্ঠা,চিঠির মাধ্যমেই প্রকাশিত হত আমাদের মনের রাজ্যের সব কথা।
তাই বলে সব চিঠি যে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা হবে এমন ভাবা কিন্তু অবান্তর। হয়তো কোনো চিঠিতে শুধু লেখা আছে “কেমন আছো?”
একটি বাক্যেই চিঠি শেষ।
কিন্তু,সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় পৃথিবীর সবথেকে ছোট চিঠিটা এর থেকেও ছোট ছিলো। নিশ্চয়ই জানার আগ্রহ জাগ্রত হচ্ছে যে কি লেখা ছিলো ওই চিঠিতে।
ওই চিঠিতে শুধু একটি “প্রশ্নবোধক চিহ্ন” ছিলো।১৮৬২ সালে ফরাসী ঔপন্যাসিক ভিক্টর হুগো এই চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন তাঁর প্রকাশককে।চিঠিতে তিনি জানতে চেয়েছিলেন তাঁর বই “লা মিজারেলস” কেমন বিক্রি হচ্ছে,আর সেটি জানার জন্য তিনি শুধু চিঠিতে লিখেছিলেন, “?”
বাংলায় প্রবাদ আছে,”সের এর উপর সোয়া সের”, তাঁর প্রকাশক ছিলেন অনেকটা ওইরকম। তিনি চিঠির প্রতি উত্তরে লিখেছিলেন,”!”।এর মানে বইটি চমৎকার বিক্রি হচ্ছে।
সবচেয়ে অবাক এবং মজার কথা হলো,ভিক্টর হুগো যে বইটির কথা জানার জন্য পৃথিবীর সবথেকে ছোট চিঠিটি লিখেছিলেন, সে বইটি মোটেও ছোট ছিলো না।সেটি ছিলো ১২০০ এর বেশি পৃষ্ঠার দীর্ঘ একটি বই।