ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে এক ভাই বিএনপি, আরেক ভাই জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে আলহাজ আজিজুর রহমান ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেন। অন্যদিকে তার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
দুই ভাইয়ের এই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ইতিমধ্যে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের ঐতিহ্যগত ভোটব্যাংক থাকা এই এলাকায় পারিবারিকভাবে বিভাজন নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মনোনয়নপত্র দাখিলের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলহাজ আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমি ১৯৯১ সালে নির্বাচন করেছি। নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। সেই হিসেবে আমি আমার ছোট ভাইকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখি না। একটি কথা পরিষ্কার করতে চাই—সে আমার ভাই হলেও বিমাতা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস রয়েছে, তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। আমি নির্বাচিত হলে এই অঞ্চলের মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখব।’
আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমি একাধিক মেয়াদে চেয়ারম্যান ছিলাম। নির্বাচন করার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। সুতরাং জামায়াতে ইসলামী আমার ভাইকে প্রার্থী করে কোনো প্রকার ফায়দা নিতে পারবে না। আমি জিতব।’
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ‘আমার ভাই বিএনপির প্রার্থী—এতে ভোটে কোনো প্রভাব পড়বে না। আমরা সব সময় পরস্পরকে শ্রদ্ধা করি। ভাইয়ে ভাইয়ে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, তবে রাজনৈতিক মাঠে কোনো ছাড় নেই। রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করেই আমি জয়ী হব।’
স্থানীয়দের মতে, একই পরিবারের দুই প্রার্থীর কারণে নির্বাচনী আমেজ কিছুটা ম্লান হতে পারে এবং বিএনপি-জামায়াত ঘরানার ভোটে বিভাজন সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিএনপি ও জামায়াত—উভয়ই বড় রাজনৈতিক দল। ফলে যাদের ভোটসংখ্যা বেশি হবে, তারাই জয়ী হবেন বলে মনে করছেন তারা।
এছাড়া কুড়িগ্রাম-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী হাফিজুর রহমান, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ফজলুল হক মণ্ডল, সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) থেকে খালেকুজ্জামান এবং সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ-মার্ক্সবাদী) থেকে রাজু আহমেদ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
সিএ/এএ


