ফেসবুকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন শুধু আপনার পোস্ট করা ছবিই নয়, বরং ফোনে থাকা—তবে এখনো শেয়ার না করা ছবিগুলোর প্রতিও নজর রাখছে। মেটা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন এই ফিচারটি পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর এখন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ব্যবহারকারীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হয়েছে।
এই ফিচারের মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীর ফোনে থাকা ছবির ভিত্তিতে তাদের জন্য বিভিন্ন সাজেশন বা পরামর্শ দেওয়া—যেমন কোলাজ তৈরি, জন্মদিন থিম সাজানো, স্মৃতি রিভিউ তৈরি করা কিংবা নতুন ডিজাইন প্রস্তাব করা। তবে এটি সম্পূর্ণই ব্যবহারকারীর সম্মতির ভিত্তিতে সক্রিয় হবে।
কিভাবে কাজ করে ফিচারটি
প্রথমবার ব্যবহারকারী ফেসবুক অ্যাপ খুললে একটি বার্তা দেখা যাবে, যেখানে লেখা থাকবে—“আপনার গ্যালারির ছবি থেকে সৃজনশীল ধারণা দিতে ফেসবুককে ক্লাউড প্রক্রিয়ায় অনুমতি দিন।” ব্যবহারকারী সম্মতি দিলে অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার ফোনের ছবিগুলো মেটার ক্লাউড সার্ভারে পাঠাবে। এরপর এআই প্রযুক্তি ছবিগুলোর মুখ, বস্তু, স্থান, সময় ও তারিখ বিশ্লেষণ করে ব্যক্তিগত সাজেশন তৈরি করবে।
মেটা দাবি করেছে, এই ছবিগুলো বিজ্ঞাপন বা লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হবে না। তবে যদি ব্যবহারকারী সেই ছবি সম্পাদনা করেন বা ফেসবুকে শেয়ার করেন, তাহলে সেগুলো কোম্পানির এআই সিস্টেম প্রশিক্ষণে ব্যবহার হতে পারে।
গোপনীয়তা ও তথ্য বিশ্লেষণ
মেটার নীতিমালা অনুযায়ী, সম্মতি দিলে ব্যবহারকারীর ছবিতে থাকা মুখমণ্ডল, মানুষ, বস্তু এবং স্থান সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করা হবে। এসব তথ্য ব্যবহার করে মেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি পরিবর্তন, সংক্ষিপ্তসার তৈরি কিংবা নতুন কনটেন্ট সাজেস্ট করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ফিচারের মাধ্যমে মেটা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত অভ্যাস, পছন্দ ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে বিশাল ডেটা সংগ্রহ করতে পারবে, যা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিযোগিতায় আরও এগিয়ে দেবে।
এর আগে মেটা ঘোষণা দিয়েছিল—ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত পাবলিক পোস্ট, মন্তব্য ও ছবি তাদের ছবি শনাক্তকরণ এআই প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যবহারকারীদের ২০২৫ সালের ২৭ মে পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
সিএ/এমআর


